শফিকুল ইসলাম রানা, একজন মূলধারার টেলীভিশন সংবাদকর্মী জীবনের দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু করতে গিয়ে পড়েছেন এক ভয়ঙ্কর প্রতারণার ফাঁদে—যেখানে ‘বিয়ে’ ছিল শুধু একটি হাতিয়ার, এবং মূল লক্ষ্য ছিল ‘কাবিন বাণিজ্য’। অভিযোগ মতে, একটি সংঘবদ্ধ চক্রের পরিবার, পরিকল্পিতভাবে তাকে বিয়ের নামে প্রতারিত করে, এবং পরে কাবিনের টাকা আদায়ের উদ্দেশ্যে ভয়ভীতি ও মামলা দেওয়ার হুমকি দিয়ে হয়রানি করতে থাকে। ভুক্তভোগী টেলীভিশন সংবাদকর্মী জানান, ২০২৪ সালের ১৫ জুলাই ঘটক জিয়াউদ্দিন ও কাশেমের মাধ্যমে তিনি পরিচিত হন বিউটি আক্তার সামিয়া নামের এক মেয়ের পরিবারের সাথে। মেয়েটির পিতা-বিল্লাল হোসেন, মা- রাজিয়া বেগম, গ্রাম ৮নং মোবারকদী মতলব দক্ষিণ উপজেলা। একটি শিশুকন্যার ভবিষ্যতের কথা ভেবে ভুক্তভোগী সংবাদকর্মী ২য় বিয়েতে আগ্রহী হলে সময় ও প্রস্তুতির অভাব থাকায় পরিচয়ের প্রথম দিন বিয়েতে রাজি হননি। কিন্তু মেয়ের পক্ষের খুব আগ্রহের ফলে পরেরদিন বিয়েতে রাজি হন। যেখানে কাবিন নির্ধারিত হয় ১ লাখ টাকা।বিয়ের পরপরই শুরু হয় মেয়ের পরিবারের অস্বাভাবিক আচরণ। বিয়ের দিনেই সামিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে বিয়ের বাজার চেয়ে চাপ সৃষ্টি করা হয়। এরপর থেকে ক্রমাগত মানসিক চাপ, শারীরিক অক্ষমতা, চিকিৎসাজনিত গোপন রোগ এবং শিশুকন্যার প্রতি নির্যাতনের অভিযোগ উঠে আসে সামিয়া ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন, সামিয়া বিয়ের পর থেকেই টিকটক, মোবাইলে আসক্ত এবং কোনো কারণ ছাড়াই ৩দিন না যেতেই সংসার করতে না চাওয়ার প্রবনতা দেখা যায় এবং তার মাও একই সময় আর্মি ও উকিলের ভয় দেখিয়ে কাবিনের টাকা দাবি করে। এছাড়া তাদের আচরণে বোঝা যায়, এটি একটি সুপরিকল্পিত কাবিন বাণিজ্যের অংশ। যেখানে চা দোকানি ঘটক জিয়াউদ্দিন মূল ভূমিকা পালন করেন এবং সামিয়া সহ তার মা ও বাবা একইসাথে একজন আইনজীবি সহকারী (মুহুরি) এই চক্রের সদস্য।প্রথমে এরা বিয়ের কাজ সম্পন্ন করে এবং পরে মামলা সহ নানা ভয়ভীতির মাধ্যমে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেয়। সামিয়ার বিয়ের পর থেকে জরায়ুতে টিউমার ও সবসময় মাথার সমস্যার কারনে সাংসারিক কাজে শারীরিক অক্ষমতা প্রকাশ হতে থাকে। যা বিয়ের আগে গোপন করা হয়েছে যা রীতিমত প্রতারণা। এসব অসুস্থতার বিষয় যেন ধরা না পড়ে তাই শ্বশুর বাড়িতে থাকতে অসীকৃতি জানায় সে। যে কয়দিন ছিলো সে সময়ে সামিয়ার মা জামাইয়ের বাড়িতে এসে রান্না বান্না সহ সকল কাজ করতো । গণমাধ্যমকর্মী বলেন বিষয়টি দেখতে দৃষ্টিকটু হওয়ায় সে কারণে সামিয়া আমাদের বাড়িতে থাকেনি তাদের বাড়িতেই থাকতো। আমাদের বাড়িতে যেতে চাইতো না এবং তার মাও যেতে দিতো না। তাই শিশু বাচ্চাসহ সামিয়াদের বাড়িতে থকার কথা বলে সামিয়ার মা ও সামিয়া আমি শিশু বাচ্চার ভালোর কথা ভেবে সেখানে থাকার অনুমতি দেই এবং সকল খরচসহ নানান অযুহাতে যখন টাকা পয়সা যা চাইতো তাই দিতাম। সবচেয়ে ভয়ঙ্কর অভিযোগ আসে ভুক্তভোগীর শিশুকন্যার মুখে। যেখানে সে বলে, নতুন সৎমা সামিয়া তাকে পেটে পারা দেয়, সবসময় সারীরিক নির্জাতন করে এবং মেরে ফেলাসহ, প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এবং তারা শিশু বাচ্চার দূর্বলতা কাজে লাগিয়ে সব সময় হুমকি দিয়ে আসতো। এক পর্যায় পরিস্থিতি স্পষ্ট হওয়ার পর শিশু কন্যার জীবনের হুমকি মনে করে সামিয়াদের বাড়ি থেকে শিশুকন্যাকে নিয়ে আসি। পরবর্তীতে পারিবারিকভাবে বৈঠকের জন তাদেরকে ডাকা হলে তারা আসে এবং আমাকে হুমকি কি কারণে দিয়েছে, বাচ্চাকে নির্জাতনের কারণ তার সঠিক ব্যাখ্যা না দিয়ে সেখান থেকে তারা হুমকি দিয়ে ও অশালীন ভাষায় গালাগালি করে চলে যায়। এক পর্যায় জিয়াউদ্দিন ফোনে জানায় তাদেরকে ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দিতে। অতঃপর ভুক্তভোগী তালাক নোটিস পাঠান(২১-০১-২৫ ইং তারিখ ) কিন্তু এরপরও চাপ, ভয়ভীতি ও আর্থিক দাবিদাওয়া বন্ধ হয়নি। এমনকি দরবারির মাধ্যমে একাধিকবার কাবিনের টাকা চাওয়া হয়। পরে জানা যায় (১৩-০৪-২৫ তারিখে) সামিয়ার পক্ষ থেকে ঊল্টো ৩ ধারায় নারীনির্যাতন মামলা করা হয়েছে। এই বিষয়ে সামিয়ার বাড়িতে গিয়ে তাকে না পাওয়া গেলে তার বাবার সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, ঘটনা সবই ঠিকাছে। কপালে যা আছে, তাই হয়েছে, আর কি করবো। এদিকে ভুক্তভোগী বলেন, আমি একজন টেলিভিশন মিডিয়াকর্মী হয়ে যখন এই ভয়ঙ্কর ফাঁদের শিকার হয়েছি, তখন সাধারণ মানুষের কী হাল হয় তা সহজেই অনুমেয়। এদের মুখোশ উন্মোচন করে আইনের আওতায় আনা এখন সময়ের দাবি পরিশেষে __বর্তমানে দেশে এক শ্রেণির অসাধু চক্র বিয়ের নামে প্রতারণা করে কাবিন ও আইনের অপব্যবহারের মাধ্যমে আর্থিক ও সামাজিক হয়রানি চালিয়ে যাচ্ছে। ভুক্তভোগী এই ধরনের প্রতারণা রোধে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এ বিষয়ে চাঁদপুর সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
Leave a Reply