ওয়াহিদ মুরাদ, খুলনা ব্যুরো চীফ– প্রচণ্ড দাবদাহে অতিষ্ঠ জনজীবনে খানিক স্বস্তি এনে দিচ্ছে মধুমাসের সুস্বাদু ও শীতল ফল—তাল শাঁস। তীব্র তাপদাহে খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার, স্কুল-কলেজের পাশের রাস্তার মোড়ে মোড়ে দেখা মিলছে তাল শাঁস বিক্রেতাদের। তৃষ্ণার্ত পথচারী থেকে শুরু করে , রিকশাচালক,শিক্ষার্থী ও দিনমজুর—সবাই পিপাসা মিটাচ্ছেন এই তালশাঁস খেয়ে। শুধু শহরেই নয়, উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মানুষ ভ্যানে করে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে বিক্রি করছেন তাল শাঁস। কেউ কেউ আবার দূর-দূরান্তের গ্রাম থেকে তাল শাঁস সংগ্রহ করে এনে বাজারে বিক্রি করছেন জীবিকার আশায়। এভাবে প্রায় শতাধিক পরিবার গরমকালীন এই মৌসুমি তাল শাঁস বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। জ্যৈষ্ঠ মাসকে বলা হয় মধু মাস । এই মধু মাসে নানা রকমের ফল বাজারে ওঠে। ইতোমধ্যে বাজারে আম, জাম, লিচু, তরমুজ, বাঙ্গিসহ হরেক রকমের ফলের দেখা মিলছে। এরই সঙ্গে এ মৌসুমে অন্যান্য বছরের ন্যায় এবারও যুক্ত হয়েছে তালের শাঁস। গরমের দিনে এই তাল শাঁস যেমন পানির পিপাসা মেটায় তেমনি এটি খুব সুস্বাদু।। গরমে অস্থির পথচারীদের মুহূর্তের জন্য হলেও স্বস্তি এনে দেয় এই কচি তালের শাঁস। তাইতো প্রচণ্ড তাপদাহে চাহিদার পাশাপাশি বেড়েছে তালের শাঁসের কদর। দিঘলিয়ার বিভিন্ন হাট কিংবা বাজার এলাকার মোড়ে মোড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে তালের শাঁস। ছোট বড় প্রকার ভেদে প্রতিটির দাম ৮ টাকা থেকে ১০ টাকা দরে বিক্রি করছে বিক্রেতারা। আম ও লিচুসহ মৌসুমি অন্য ফলের ক্ষেত্রে বর্তমানে বিষাক্ত ফরমালিন ব্যবহারের ঘটনা খুবই স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। কিন্তু তালের শাঁসে এসবের প্রয়োজন হয় না। ফলে ভেজালমুক্ত তাল শাঁসের কদর বেশি। দিঘলিয়ার সেনহাটি বাজারের তাল ব্যবসায়ী আঃ কুদ্দুস ও দিঘলিয়ার আরজান মোড়ল বলেন, গ্রামে গ্রামে ঘুরে তাল গাছের মালিকের কাছ থেকে পাইকারী তাল ক্রয় করে গাছ থেকে পেড়ে এনে তাল শাঁস পার্শ্ববর্তী সুবিধাজনক মোড়ে বসে কেটে কেটে বিক্রি করছি। পার্শ্ববর্তী হাটে ও বাজারেও বিক্রি করি। তারা বলেন, প্রতিবছরই এ সময়ে আমরা তালের শাঁস বিক্রি করে থাকি। গরমের এ দিনে তালের শাঁস বিক্রিও হয় ভালো। বেশ চাহিদাও রয়েছে। পাশাপাশি দামও ভালো রয়েছে। প্রতি পিস তালের শাস ৮ থেকে ১০ টাকা (পিস) দরে এবং এক জোড়া ১৫ টাকা দরে বিক্রি করছি। স্বাস্থ্যবিদদের মতে, তালের শাঁস শরীরের জন্য খুবই উপকারী। গরমের দিনে তালের শাঁসে থাকা জলীয় অংশ পানি শূন্যতা দূর করে। এছাড়া ক্যালসিয়াম, ভিটামিন-এ বি সি সহ নানা ধরনের ভিটামিন রয়েছে। তালে থাকা এন্টি অক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় এবং কচি তালের শাঁস রক্তশূন্যতা দূর করে। চোখের দৃষ্টি শক্তি ও মুখের রুচি বাড়ায়।
Leave a Reply