1. admin@pressbd.online : admin :
শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৬:০৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
ফাইতংয়ে বিএনপির বিশাল জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত মাদরাসাতুল হিদায়াহ ঈদগাহের উদ্যোগে হিফজ শিক্ষার্থীদের সবিনা ও হিজাব প্রদান  ঈদগাঁও মাইজপাড়া বাসীর মিলন মেলা সম্পন্ন খুলনার আয়তুননেছা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত পটিয়ায় সোলাইমানিয়া নুরে মওলা  অলিম্পিক ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধন শ্রীপুরে কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত  মুক্তাগাছায় আ’লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা যদু গ্রেফতার জনাব তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়ন লক্ষ্যে মত বিনিময় সভা, চাঁদপুর কে শিল্পাঞ্চলে রূপান্তর করার আশ্বাস – মোস্তফা খাঁন সফরী তারাকান্দায় যৌথবাহিনীর অভিযানে আ’লীগের নেতা সহ ইউপি চেয়ারম্যান বাবুল গ্রেফতার কুষ্টিয়ায় ডাম্প ট্রাকের ধাক্কায় নারীসহ নিহত ২

দুই হাত হারিয়ে পঙ্গুত্ববরণ করে মানবতার  জীবনযাপন করছে  সাঈদ

  • প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ২১ বার পাঠ করা হয়েছে

হৃদয় রায়হান কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি: ১১ হাজার ভোল্টের বিদ্যুতের লাইনে কাজ করার সময়  বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে গুরুতর আহত হন সাঈদ আহমেদ (২৫)। পরে তার দুটি হাতই কেটে ফেলতে হয়। এ ছাড়া পা ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষত হয়েছে। দুর্ঘটনায় বেঁচে ফিরলেও জীবনযুদ্ধে তিনি প্রায় পরাজিত। দুই হাত হারিয়ে পঙ্গুত্ববরণ করে মানবেতর জীবনযাপন করছেন সাঈদ আহমেদ। স্বপ্নভঙ্গ হয়েও নতুন করে স্বপ্ন বুনছেন তিনি। সব বাধা ডিঙিয়ে এগিয়ে যেতে চান। কৃত্রিম হাত ও কর্মসংস্থানের জন্য সহযোগিতা চেয়েছেন সাঈদ, তার পরিবার ও স্থানীয়রা। সাঈদ আহমেদ কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার বহলবাড়ীয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাহেবনগর গ্রামের দক্ষিণপাড়ার মিলন মালিথার ছেলে। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। ২০২৩ সালে কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিদ্যুৎ বিভাগের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আইরা কনস্ট্রাকশনে লাইনম্যান হিসেবে চাকরি করতেন সাঈদ। সাঈদ আহমেদ  বলেন, ২০২৩ সালের ১৭ অক্টোবর প্রতিদিনের মতো বিদ্যুতের খুঁটিতে উঠে লাইনের কাজ করছিলাম। আমরা অফিসের নির্ধারিত সময়ে নির্ধারিত জায়গায় কাজ করতাম। লাইনের কাজ শুরুর আগে থেকে কাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত সময় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা হয়। সেদিনও কাজ শুরুর আগে বিদ্যুতের সংযোগ বন্ধ ছিল। কিন্তু কাজ শেষ হওয়ার আগেই ফোরম্যান সাহাবুল বিদ্যুৎ লাইন চালু করে দেন। সে আমাদের সঙ্গে কথা না বলেই বিদ্যুৎ চালু করে। তার জন্যই আমি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বিদ্যুতের খুঁটির উপর থেকে নিচে পড়ে যাই। এতে গুরুতর আহত হয়ে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলাম। জ্ঞান ফিরলে দেখি আমি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। স্বপ্নভঙ্গের গল্প বলতে গিয়ে বারবার কেঁদে ফেলেন সাঈদ। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি আরও বলেন, ফোরম্যান সাহাবুলের কারণে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে গুরুতর আহত হই। পরে আমাকে সেখান থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে চট্টগ্রাম হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানে ১১ দিন ছিলাম। অবস্থা খারাপ হওয়ায় সেখানকার দায়িত্বরত চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে রেফার্ড করেন। সেখানে আনুমানিক দেড় মাস চিকিৎসাধীন ছিলাম। পরে চিকিৎসারত অবস্থায় আমার দুই হাত কেটে ফেলতে হয়। ঘটনার ১৪ দিন পর ডান হাত আর ২০ দিন পর বাম হাত কেটে ফেলতে হয়। দেড় মাস পরে সেখান থেকে বাসায় চলে আসি। এরপর টাকার অভাবে আর চিকিৎসা করাতে পারিনি। তিনি আরও বলেন, আমার বাড়ির পার্শ্ববর্তী বহলবাড়িয়া এলাকার শাহাবুল (৪৫) কক্সবাজারের কুতুবদিয়া এলাকায় বিদ্যুতের কাজের সাব-কন্ট্রাক্টর ও আইরা কনস্ট্রাকশন লাইনম্যান হিসেবে কাজ করতেন। ২০২৩ সালের জুন মাসে ছুটিতে গ্রামের বাড়ি এসে আমাকে কাজ করার জন্য বলেন। তাদের সঙ্গে বেতন, ভাতা এবং ঝুঁকি ভাতার চুক্তি করে আইরা কোম্পানিতে জুলাই মাসে কুতুবদিয়ায় বিদ্যুতের কাজ শুরু করি। সেখানে তিন মাস কাজ করার পর এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার জন্য শাহাবুল দায়ী। সে আমাদের অনুমতি না নিয়েই হঠাৎ বিদ্যুতের লাইন চালু করেছিল। তখন বলা হয়েছিল আমাকে ক্ষতিপূরণ দিবে, কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী আমাকে কোনো সহযোগিতা করেনি। পরবর্তীতে আমি আইরা কোম্পানির সিনিয়রদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। কেউ সহযোগিতা করেনি। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করায় শাহাবুল আমাকে হুমকি-ধমকি দেয়। এজন্য থানায় অভিযোগ দিয়েছি। দুই হাত হারিয়ে আমি পঙ্গু, মানবেতর জীবনযাপন করছি। কেটে ফেলা হাতের দিকে তাকালেই কান্না হয়। আমরা গরিব মানুষ। ঠিকমতো চিকিৎসা করতে পারিনি। আমার সব স্বপ্ন ভেঙে গেছে। এভাবে জীবনযাপন করতে খুব কষ্ট হয়। একা একা খেতে পারি না। কোনো কাজ করতে পারি না। সব বাধা ডিঙিয়ে আমি এগিয়ে যেতে চাই। কৃত্রিম হাত ও কর্মসংস্থানের জন্য সহযোগিতা চাই। সাঈদের দেখভাল করেন তার দাদা-দাদি। দাদি চায়না খাতুন ও দাদা সিরাজ মালিথা বলেন, বিদ্যুতের লাইনে কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে গুরুতর আহত হয়। পরে সাঈদের দুই হাত কেটে ফেলা হয়েছে। সে কোনো কাজ করতে পারে না। একা একা খেতে পারে না। গোসল করতে পারে না। আমরা ছোট বাচ্চার মতো তাকে লালনপালন করি। সে পঙ্গু হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। আমরা খুব গরিব মানুষ। অর্থের অভাবে তার চিকিৎসা করাতে পারি না। অভাবের তাড়নায় ভাতই বন্ধ হয়ে আছে। খুব কষ্টের মধ্যে আছি। সবার কাছে সাহায্য চাচ্ছি। তার কর্মসংস্থান ও কৃত্রিম হাতের ব্যবস্থা করে দেন। হালিম, নাজমাসহ বেশ কয়েকজন প্রতিবেশী বলেন, কাজ করতে গিয়ে কারেন্টে ধরেছিল। তার হাত দুইটা কেটে ফেলা হয়েছে। পায়েও সমস্যা। টাকাপয়সার অভাবে চিকিৎসা করতে পারে না। তারা গরিব মানুষ। তাদের অনেক কষ্ট। সাঈদকে সবাই সহযোগিতা করেন। এ বিষয়ে ফোরম্যান সাহাবুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলার জন্য মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। এ বিষয়ে মিরপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোমিনুল ইসলাম বলেন, সাঈদ আহমেদ অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বিবি করিমুন্নেছা বলেন, সাঈদ আহমেদ যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করতো সেই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। তারা তাকে সহযোগিতা ও ক্ষতিপূরণ দিতে পারে। এ ছাড়া আমরা তার প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যবস্থা করে দিতে পারব।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
February 2025
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
© All rights reserved © 2024
কারিগরি সহযোগিতায়: জাগো হোষ্টার বিডি