মোহাম্মদ জুবাইর, চকরিয়া প্রতিনিধি: কক্সবাজারের চকরিয়ায় প্রকৌশলী কফিল উদ্দিন ও মাস্টার গিয়াস উদ্দিনের মালিকানাধীন মাস্টারমাইন্ড অটো ব্রিকস কারখানায় দুই শ্রমিক নিহতের খবর পাওয়া গেছে। ১৮ডিসেম্বর (বুধবার) চকরিয়া পৌরসভা ১নং ওয়ার্ডের বেতুয়াবাজার সড়ক লাগোয়া তরচপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত দুই শ্রমিক হলেন- উপজেলার ফাঁশিয়াখালী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড দক্ষিণ ঘুনিয়া এলাকার মো. শাহিন (১৮) ও পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের করাইয়াঘোনার কামরানুল ইসলাম জিহান (২০)। স্থানীয় লোকজন জানায়, দুই বছর আগে সরকারী কোন দপ্তর থেকে অনুমতি না নিয়েই মিক্সার মেশিনের হলো ব্লক তৈরীর কারখানাটি চালু করা হয়। এই মেশিনে বালু ও সিমেন্ট মিশিয়ে ব্লক তৈরী করায় একদিকে ওই কারখানার শ্রমজীবিরা জীবনঝুঁকিতে থাকে অপর দিকে ওই কারখানা থেকে মাতামুহুরী নদী থেকে অবৈধ পন্থায় আরহিত বালুর সাথে সিমেন্ট মিশিয়ে ব্লক তৈরীর সময় নিকটস্থ পাড়া মহল্লা ও মসজিদ মাদ্রাসা এলাকায় ধোঁয়া ছড়িয়ে পরিবেশ দুষিত হয়ে পড়ে। এর প্রেক্ষিতে কারখানাটি তৈরীর পরপরই স্থানীয় লোকজন প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করে। কিন্তু রহস্যজনক কারণে কোন দপ্তরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়নি। সেই অবৈধ কারখানায় বুধবার সন্ধ্যার দিকে মিক্সার মেশিনটি বন্ধ করে দুই শ্রমিক মেশিনটি পরিস্কার করার সময় হঠাৎ মেশিনটি চালু হয়। এ সময় মেশিনের ভিতরে আটকে পড়া শাহিন ও জিসান পিষ্ট হয়। ঘটনাটি প্রথমে মালিকপক্ষ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু অপর শ্রমিকরা তাদের দুই সহকর্মীকে পুরো শরীর ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। তাদের চেহারা ক্ষতবিক্ষত হয়ে পড়ায় চেনার উপায় ছিল না। কিন্তু শ্রমিক ও আত্নীয়স্বজন নিহত দুই শ্রমিকের পরিচয় সনাক্ত করেন। সনাক্তের সময় হাসপাতালে আত্মীয়দের আহাজারীতে কয়েকশত মানুষ জড়ো হয়। জিহানের বড় ভাই জাহেদুল ইসলাম ও বড় বোন তাসমিন আক্তার বলেন, আমার ভাই ভুলবশত নাকি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে মারা গেছে তদন্ত করতে হবে প্রশাসনকে। এ সময় শাহিনের মা হাসপাতালে এসে ছেলের মৃতদেহ দেখেই চিৎকার দিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। ব্লক ফ্যাক্টরীর মালিক মো. গিয়াস উদ্দিনের বক্তব্য জানতে তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে, ঘটনার পর পরই গিয়াস উদ্দিনকে চকরিয়া থানার আশপাশে ঘুরতে দেখা গেছে বলে চকরিয়া থানার সামনের ব্যবসায়ীসহ অনেকে জানান। চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনজুর কাদের ভুঁইয়া জানান, ঘটনাটি শুনেই হাসপাতালে পুলিশের একটি টিম পাঠিয়েছি। ওই টিম প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির পর মরদেহ ময়নাতদন্ত করতে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে। তাদের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ আমরা খতিয়ে দেখছি।