মোহাম্মদ আবুবক্কর ছিদ্দিক স্টাফ রিপোর্টার মহেশখালী: চলতি মৌসুমে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলায় ৮ হাজার ২ শত হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এ বছর আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসে খরা বৃষ্টির কারণে আমন চাষাবাদ করতে কিছুটা বিলম্ব হলেও ঠিক সময়ে চাষিরা উপজেলা জুড়ে জমিতে চাষাবাদ শুরু করেন। অনুকূল পরিবেশ, সময়মতো সার ও কীটনাশক প্রয়োগ এবং কৃষকের নিবিড় পরিচর্যায় মাঠে মাঠে আমন ফলেছে আশানুরূপ। ফলে কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসির ঝিলিক। বর্তমানে দিগন্ত বিস্তৃত মাঠে সোনালি ধান ইতোমধ্যে কাটতে শুরু করছেন প্রান্তিক কৃষকরা। আমনের ফলন ভালো হওয়ায় চলতি বছরও লক্ষ্যমাত্রা পৌঁছে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, এমনটাই নিশ্চিত করেছেন কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা। সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার সর্বত্র এখন আমন ফসলের মাঠে পাকা ধানের সোনালি হাসি। অগ্রহায়ণের উজ্জ্বল রোদে সেই হাসি আরও ঝলমল করছে। নতুন ধানের গন্ধে জনপদের গ্রামে-গ্রামে নবান্নের সাজ সাজ রব। মাঠে মাঠে কৃষকরা কাস্তে নিয়ে ধান কাটার উৎসবে নেমে পড়েছেন। কুয়াশা ভেজা শীতের সকাল থেকে শুরু করে পড়ন্ত বিকেল পর্যন্ত ফসল কর্তনের চিরাচরিত দৃশ্য এখন সর্বত্র। ধান মাড়াই, বাছাই আর শুকানোর কাজে ব্যস্ত এখানকার কৃষক পরিবার। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় আমন ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। তবে এ বছর খরা বৃষ্টির কারণে আবহাওয়া ও পরিবেশ অনুকূল না থাকলেও ধানের ফলন কিন্তু ভালো হয়েছে। ফলন ভালো হলেও কৃষকের মন ভরছে না। কারণ বর্তমান সময়ে কৃষিতে যে পরিমাণ খরচ হয়েছে এতে তাদের উৎপাদন খরচই মিলছে না এমন অভিযোগও করেছেন বেশ কয়েকজন কৃষক। এ বিষয়ে পেকুয়া উপজেলা কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ৮ হাজার ২ শত হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে চাষাবাদ শুরু করা হয়। তৎমধ্যে এ বছর ৮ হাজার ২ শত হেক্টর জমিতে উপশী জাত, ২ শত হেক্টর জমিতে হাইব্রিড জাতের ধান চাষাবাদ করা হয়। জমিতে যেসব চাষাবাদ করা হয়েছিল তৎমধ্যে উপশী জাতের ব্রি-ধান ৩৩, ৪৯, ৭৫ ও ৮৭, ৮৯। মূলত জৈব প্রযুক্তি ব্যবহার, সুষম সার ব্যবহার ও আধুনিক উচ্চ ফলনশীল জাত ব্যবহারের কারণে চাষাবাদে ফলন বৃদ্ধি হয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, ক্ষেতে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষা করতে চাষের শুরুতেই কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদেরকে দিক-নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা মোতাবেক কৃষকেরা গুটি ইউরিয়া ও এলসিসি পদ্ধতি অনুসরণ করে আমন চাষাবাদ শুরু করে। এই পদ্ধতিতে চাষ করলে কৃষকেরা ভাল ফলন ঘরে তুলতে পারে বলে জানান তিনি। তবে চিত্রাংকের প্রভাবে লবণাক্ত পানির জন্য পেকুয়ায় একটু ক্ষতি হয়েছে।