ওয়াহিদ মুরাদ, খুলনা ব্যুরো চীফ-- খুলনার দিঘলিয়ার ঐতিহ্যবাহী সুগন্ধি মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দুইদিন ব্যাপী পিঠা উৎসব এবং বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়। বুধবার (২২ জানুয়ারি) স্কুল প্রাঙ্গণে আয়োজিত পিঠা উৎসবে শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন শ্রেণী পেশার জনসাধারণের উপস্থিতিতে উপচে পড়া ঢল নেমেছিল। আনুমানিক ১২শ'র বেশি শিক্ষার্থী ও জনসাধারণের উপস্থিতিতে পিঠা উৎসব হয়ে উঠেছিল এক মহামিলন মেলার প্রাণকেন্দ্র। উৎসবটি সকাল ১০ টা থেকে শুরু হয়ে একটানা সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে। এতে ২০ টি স্টল স্থান পায়। সুগন্ধি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত পিঠা উৎসবে ২০টি স্টলে শতাধিক বাহারি পিঠার সমাহার ঘটে। চিতই, ভাপা, পুলি, তক্তি, নকশি পিঠা, ডিমের পুডিং, পাটি সাপটা, ঝাল চন্দ্রকোনা, চন্দনকুলি, দুধ খেঁজুর, নারকেলের চিড়া, রসপান, হৃদয়হরণ, গোকুলসহ হরেক রকমের পিঠা নিয়ে উৎসবে অংশ নেন স্কুলটির শিক্ষার্থী বৃন্দ। তাদের তৈরি পিঠার স্বাদ নিতে ও কিনতে বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসেন শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। দৃষ্টিনন্দন সাজে স্টলে নানা রকম পিঠাপুলি নজর কাড়তে সক্ষম হয় ক্রেতা ও শিক্ষার্থীদের। পিঠা উৎসব উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুল ইসলাম। উক্ত পিঠা উৎসবে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা দপ্তরের একাডেমিক সুপারভাইজার মাকসুদা খানম। এ সময় তাদের সঙ্গে ছিলেন উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন দপ্তরের আরো অনেক কর্মকর্তা বৃন্দ। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন কবির বিশ্বাস এবং অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ প্রধান অতিথি এবং অন্যান্য অতিথিবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে পিঠা উৎসবের স্টল গুলি প্রদক্ষিণ করেন এবং এই আয়োজনের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য সম্পর্কে অতিথিদের বিশদ ধারণা প্রদান করেন। এ সময় প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, এ ধরনের পিঠা উৎসব দেখে আমি আসলে খুবই আনন্দিত ও মুগ্ধ হয়েছি। পিঠা উৎসব গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী একটি সংস্কৃতি। তিনি আয়োজক কমিটিকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দান করেন। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিন ২৩ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় বিদ্যালয়ের নিজস্ব মাঠে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন কবির বিশ্বাসের জ্ঞানগর্ব বক্তব্যের মাধ্যমে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এ সময় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীবৃন্দ মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজের মাধ্যমে অতিথিদের অভিবাদন জানান এবং শপথ গ্রহণ করেন। বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মোঃ আবুল হাসান, সহ শিক্ষক মোঃ মাহবুবুল আলম এবং সহশিক্ষক সাইফুল ইসলামের শ্রুতি মধুর মিষ্টি কন্ঠে উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে ২৩ টি ইভেন্টের মাধ্যমে দিনব্যাপী এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিটি ইভেন্টে প্রথম দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। শুধু তাই নয়, পিঠা উৎসবে অংশগ্রহণকারী সকল স্টলকে এবং কৃতি ছাত্র-ছাত্রীদের পুরস্কৃত করা হয়। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সাবেক দৌলতপুর কলেজের অধ্যক্ষ আলহাজ্ব খন্দকার গোলাম মোস্তফার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুল ইসলাম এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন একাডেমিক সুপারভাইজার মাকসুদা খানম। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, মোল্লা আফুরুল ইসলাম, মোল্লা মাকসুদুল ইসলাম, শেখ নজির আহম্মেদ , মুন্সী মাসুদুল আনিস, শেখ সেলিম রেজা, মামুন তালুকদার সহ আরো অনেকে।