মাটি মামুন রংপুর: রংপুরের হাজীরহাট মেট্রোপলিটন থানার উত্তম মৌজার এক দশমিক এক সাত একর জমির খাজনা পরিশোধের জন্য অনলাইনে আবেদন করেন স্থানীয় বাসিন্দা আবু জাফর।তবে খাজনা বাবদ বকেয়া ১১ লাখ ৩৩ হাজার টাকা দেখালে তিনি বিপাকে পড়েন। সমস্যার সমাধানে ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের কাছে গেলে কোনো সমাধান মেলেনি।পরে সহকারী কমিশনার বরাবর খাজনা সংশোধনের আবেদন করলে তদন্তে বেরিয়ে আসে প্রকৃত বকেয়া মাত্র এক লাখ ৩২ হাজার টাকা।ভুক্তভোগী আবু জাফর বলেন,আমার বকেয়া এক লাখ ৩২ হাজার টাকা। কিন্তু তারা ১১ লাখ ৫৫ হাজার টাকার মতো দাবি করেছিল।এ বিষয়ে ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন,১১ লাখ কেন, এক কোটিও আসতে পারে। তবে আমি তাদের কাছ থেকে কোনো উৎকোচ চাইনি। ভূমি অফিসে সেবা নিয়ে দুর্ভোগের অভিযোগ শুধু রংপুর সদরেই সীমাবদ্ধ নয়।সদর উপজেলার হরিদেবপুর ইউনিয়নের আব্দুল খালেক, রহিম ও হাসেম মিয়াসহ একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, টাকা ছাড়া খাজনা পরিশোধ, নামজারি বা খারিজসহ কোনো সেবা পাওয়া যায় না।ভুক্তভোগীরা বলেন, কয়েকটা কাগজ তুলতে গিয়েছিলাম। টাকা ছাড়া কোনো কাগজ তুলতে পারিনি।আরেকজন বলেন,আমি গরিব মানুষ। সাত হাজার টাকা নিছে, কিন্তু পরে কাজ করেই নাই।আরও এক ভুক্তভোগী বলেন, ‘সম্পূর্ণ খাজনা দিতে গেলে ১০ হাজার টাকা লাগে। কিন্তু আমার অল্প জমি, তাতে তো এক হাজার টাকা হলে হয়।অভিযোগের বিষয়ে হরিদেবপুর ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মাহবুবুল হাসান দাবি করেন,দালালদের দৌরাত্ম্য আগের তুলনায় কমেছে। তবে সাংবাদিকদের প্রশ্নের একপর্যায়ে তার সহকারী সংবাদ প্রচার না করার জন্য টাকা দিয়ে ম্যানেজের চেষ্টা করেন।নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা বলছেন, ভূমি অফিসে জবাবদিহিতার অভাবেই দুর্নীতি কমানো সম্ভব হচ্ছে না।রংপুর নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক পলাশ কান্তি নাগ বলেন,একটি জবাবদিহিতামূলক পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি।পাশাপাশি যারা এই ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত তাদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা উচিত। অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন,এরকম কোনো লিখিত অভিযোগ আসলে আমরা সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নিয়ে থাকি।উল্লেখ্য, রংপুর বিভাগে ভূমি অফিসের সংখ্যা ৪৯৪টি।