মোঃ সারোয়ার হোসেন অপু জেলা প্রতিনিধি,নওগাঁ: বদলগাছীতে বুদ্ধি প্রতিবুন্ধী যুবতীকে দিনের পর দিন ধর্ষণ করে অন্তঃসত্ত্বা করার অভিযোগ, প্রতিবেশী নাঈম এর বিরুদ্ধে। নওগাঁর বদলগাছীতে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী যুবতীকে চানাচুর সহ বিভিন্ন খাবারের লোভ দেখিয়ে দিনের পর দিন ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে, প্রতিবেশী নাঈমের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে জেলার বদলগাছী উপজেলার সদর ইউপির ভাতশাইল দেওয়ান পাড়া গ্রামে। জানা যায়, জেলার বদলগাছী উপজেলার সদর ইউপির ভাতশাইল দেওয়ান পাড়া গ্রামের আব্দুস সালাম এর বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কন্যা ইয়াসমিন আক্তার (১৭) কে চানাচুর এ-র লোভ দেখিয়ে বহুবার ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে ঐ গ্রামের এক যুবকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত যুবক ভাতশাইল দেওয়ান পাড়া গ্রামের ইদ্রিস আলীর পুত্র নাঈম হোসেন (২২)। ডাক্তারি পরীক্ষা অনুয়ায়ী মেয়েটি বর্তমানে ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, ইয়াসমিন আক্তার আব্দুস সালাম এর বুদ্ধিপ্রতিবন্ধি কন্যাকে গত ২৯ আগষ্ট ২০২৪ বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় চানাচুর এ-র লোভ দেখিয়ে কৌশলে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেন ঐ গ্রামের ইদ্রিস আলীর পুত্র নাঈম হোসেন।উক্ত দিন সহ বেশ কয়েকবার নাঈম হোসেন মেয়েটিকে ধর্ষণ করে আসছে বলে জানান মেয়েটির পরিবার ও একাধিক গ্রামবাসী। ঘটনার পর থেকে মেয়েটি বিভিন্ন সময় অসুস্থ হয় এবং তার বাবা মা সাধারণ ভাবে তার চিকিৎসা করান। এক পর্যায়ে তার অসুস্থতা বাড়লে বাবা মা তাকে পরীক্ষা নিরিক্ষা করান মহাদেবপুর ঘোষ ডিজিটাল ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে।পরীক্ষা নিরিক্ষা শেষে ডাক্তার জানান মেয়েটি ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। সন্দেহ বশঃবশত ২য় পরীক্ষা করান পত্নীতলার মায়া ডিজিটাল ডায়াগনষ্টিক সেন্টার নজিপুর বাসস্ট্যান্ড, নওগাঁ, পত্নীতলা, নওগাঁ। ২য় পরীক্ষাতেও একই ফলাফল আসায় মেয়েটির পরিবার মেয়েটির সাথে কথা বললে সে নাঈমের নাম জানায়। সেখান থেকে তার পরিবার নিশ্চিত হয় এর জন্য নাঈম দায়ী। মেয়েটির পরিবার জানায় এমতাবস্থায় গত ১ ফ্রেব্রুয়ারি শনিবার সন্ধ্যায় স্থানীয় ইউপি সদস্য রবিউল আউয়াল চৌধুরী পুলক সহ গ্রামের গণ্যমাণ্য ব্যক্তিদের নিয়ে একটি সালিসি বৈঠক করেন। সালিসি বৈঠকে তারা সুবিচার না পাওয়ায় গ্রামের গণ্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গ ও ইউপি সদস্যের পরামর্শে কোর্টে গত ৩ ফেব্রুয়ারি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল (২), নওগাঁয় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার নথিপত্র কোর্টে জমা থাকায় মামলার নং পাওয়া যায় নি। নাঈম ও তার পরিবার সাথে কথা বলতে গেলে গত ৩ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১ টায় নাঈম সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে বাড়ি থেকে সটকে যান। গত ৪ ফেব্রুয়ারিতে আবারও অভিযুক্ত নাঈমের সাথে কথা বলতে গেলে তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায় নি। তার পরিবার যান গতকাল থেকে সে বাসায় ফিরে নি। মেয়েটির একাধিক প্রতিবেশি ও ছেলেটির প্রতিবেশিরা জানান, নাঈম যদি অপরাধী না হয় তাহলে বাড়ি থেকে পালিয়ে আছে কেন? এবিষয়ে নাঈমেন বাবা জানান,আমার ছেলে গত দুই তিন থেকে বাসায় নাই। কোথায় গেছে জানিনা। তাকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। আপনারা ওর সাথেই কথা বলেন। এদিকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি ধর্ষণের স্বীকার মেয়েটি নওগাঁ কোর্টে থাকায় তার জবানবন্দি নেওয়া সম্ভব হয়নি। তাই ৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় সাংবাদিকগণ আবারও সরিজমিনে মেয়েটির বাসায় গিয়ে তার জবানবন্দি নেয় এ বিষয়ে ইয়াসমিন আক্তার তার জবানবন্দিতে জানান, নাঈম আমাকে চানাচুরের লোভ দেখিয়ে আমার সাথে অনেকবার খারাপ কাজ করেছে নাঈম। নাইমের নাম ঠিকানা জানতে চাইলে মেয়েটি হুবুহু এবাভেই জানান,নাঈম হোসেন বাবার নাম ইদ্রিস আলী বাড়ি আমাকে বাড়ির সামনে দোকানের কাছে বাড়ি। গ্রামবাসীরা জানান, গত ১ ফ্রেবুয়ারী ২৫ ইং তারিখ শনিবার স্থানীয় ইউপি সদস্য রবিউল আউয়াল চৌধুরী (পুলক) এর নেতৃত্বে গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিতিতে এক সালিসি বৈঠক বসে। সালিসি বৈঠকে ভূক্তোভোগী ইয়াসমিন আক্তার তার জবানবন্দিতে নাঈমের নাম উল্লেখ করেন। সালিসি বৈঠকে স্থারীয় ইউপি সদস্য সহ গণ্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গ নাঈম কে মৌখিক শাসন করলেও তিনি তা অস্বীকার করেন। এক পর্যায়ে বিয়ের প্রস্তাব করা হলেও নাঈম ও তার তা প্রত্যাখ্যান করেন। এবিষয়ে অভিযুক্ত নাঈমের বাসায় তার সাক্ষাত নিতে গেলে তার হদিস পাওয়া যায় নি। তার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে, তার মুঠোফোন টি কখনো বন্ধ পাওয়া যায় আবার কখনো মুঠোফোনটি সচল থাকলেও তিনি তার মুঠোফোন টি রিসিভ করেন না। তাই তার জবানবন্দি / বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এবিষয়ে জানতে সদর ইউপির ২ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রবিউল আউয়াল চৌধুরী (পুলক) এর মুঠোফোন যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, গত ১ ফেব্রুয়ারি শনিবার সমাধানের জন্য আমরা সালিসি বৈঠকে বসেছিলাম কিন্তু ছেলে ও তার পরিবার বিচার মেনে নেয়নি বিধায় আমরা মেয়েটির পরিবার কে আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেয়। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি তারা কোর্টে মামলা করেছে। এ বিষয়ে জানতে চেয়ে মেয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিরিক্ষাকারী ডাক্তারের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মেয়েটি ধর্ষণের স্বীকার হয়েছে এবং তিনি ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এ বিষয়ে জানতে চেয়ে বদলগাছী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শাহ জাহান আলীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মেয়েটির পরিবার অভিযোগ করতে এসেছিলেন কিন্তু আমরা তাদের কোর্টে মামলা করার পরামর্শ দিয়েছি।