মাটি মামুন রংপুর : অপারেশন ডেভিল হান্ট’ অভিযানে তৃতীয় দিনে রংপুর মহানগরসহ রেঞ্জের ছয় জেলা থেকে ছাত্রলীগ নেতাসহ ২১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৬টা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্টে’ তিন দিনে মহানগরসহ রংপুর রেঞ্জে ৭১ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরপিএমিপি) কমিশনার মজিদ আলী জানান, নগরীর কোতোয়ালি থানা এলাকা থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন- নিষিদ্ধঘোষিত মহানগর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুল হাসান প্রিতম (২৫), মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি ওমর ফারুক লিংকন (৩৯) এবং ২২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য মন্টু মিয়া (৫৮)। তাদের নামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনে হামলা, হত্যাচেষ্টা ও নাশকতার একাধিক মামলা রয়েছে। অন্যদিকে পুলিশের রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি আমিনুল ইসলাম জানান, রেঞ্জের আওতাধীন আট জেলার মধ্যে ছয় জেলা থেকে এই সময়ে ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় গাইবান্ধা ও পঞ্চগড় জেলা থেকে কেউ গ্রেপ্তার হয়নি বলেও জানান তিনি গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- রংপুর কোতোয়ালি থানার ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সালেহ উদ্দিন (৩৫), পীরগঞ্জের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পিএস ও সাবেক স্বাস্থ্য সচিব জাহাঙ্গীর আলম বুলবুলের ভাতিজা যুবলীগ কর্মী আরিফুল ইসলাম (৩৫), কুড়িগ্রাম পৌরসভার আওয়ামী লীগ নেতা সাজু মিয়া (৩৪), নাগেশ্বরী উপজেলার নুনখাওয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক তৈমুর রহমান (৩০), সন্তোষপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব আলী, ফুলবাড়ী উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শংকর কুমার সেন (৪৮), নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সমেশ উদ্দিন (৪৭), চর রাজিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আলাল উদ্দিন (৫৫), দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার পাল্টাপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য ওসমান গনি (৫৩), ফুলবাড়ী পৌর যুবলীগের সহ-সভাপতি সাবেক গণ-শিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজার রহমান ফিজারের ছোট ভাই মোহাম্মদ আলী (৪০), বিরামপুর উপজেলার খানপুর ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এমরান আলী মণ্ডল (৬০), ঠাকুরগাঁওয়ের ভূল্লি থানার আওয়ামী লীগ কর্মী রইতুল আলম (৩৯), আব্দুল গফুর (৪৫), পীরগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সামাদ (৫০), সদরের যুবলীগ নেতা উপারুল ইসলাম (৪৯), রুহিয়া থানা আওয়ামী লীগের সদস্য ওসমান গণি (৪৫)। পুলিশের রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি আমিনুল ইসলাম জানান, অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনে হামলা, হত্যা, ভীতি সৃষ্টি, হত্যাচেষ্টাসহ নাশকতা, পরিকল্পনা এবং অর্থযোগান দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।উল্লেখ্য, এ নিয়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্টে’ গত তিন দিনে মহানগরসহ রংপুর রেঞ্জে ৭১ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো। এর মধ্যে রংপুর মহানগরীতে ১৪ জন। বাকিরা সবাই রেঞ্জের বিভিন্ন জেলায় গ্রেপ্তার হয়েছে। অভিযানের প্রথম দিন মহানগর ও রংপুর বিভাগে ২০ জন, দ্বিতীয় দিনে ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা সবাই আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী। তাদের নামে একাধিক মামলা রয়েছে। সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণসহ আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্তদেরই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।