তপু রায়হান রাব্বি ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধিঃ ময়মনসিংহের ফুলপুরে এক অসহায় কৃষকের গৃহপালিত দুটি অন্তঃসত্ত্বা সহ পাঁচটি গরু চোখের সামনেই রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটে গত ২৭শে মার্চ বৃহস্পতিবার সকালে নিজ বাড়িতে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক উপজেলার রামভদ্রপুর ইউনিয়নের চরসঙ্কা গ্রামের মৃত হানিফ উদ্দিনের ছেলে মোঃ আলম হোসেন(৫৫)। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মোঃ আলম হোসেন সংবাদকর্মী তপু রায়হান রাব্বিকে জানান, গৃহপালিত দুটি অন্তঃসত্ত্বা সহ পাঁচটি গরু গত বৃহস্পতিবার সকালে গোয়াল ঘর থেকে বের করে খড় খাওয়ানোর জন্য খড়ের পালায় বেদে রাখি।পরবর্তীতে সকাল সাড়ে ১০টায় গরুগুলোকে পানি খাওয়ানোর জন্য চাড়িতে পানি, লবল, ধানের কুড়া, পল্টি ভূষি মিশিয়ে খাওয়ায়। উক্ত মিশ্রিত খাবার খাওয়া শেষে আনুঃ ২০/২৫ মিনিট পর গরুগুলো মাটিতে পড়ে যায় এবং ৫ টি গরু মারা যায়। উক্ত ঘটনায় তার মেয়ের জামাই মোঃ আলাআমিন ফুলপুর থানায় একটি সাধারণ ডাইরী করেন। মেয়ের জামাই মোঃ আলাআমিন জানান, আমার শ্বশুরের উপার্জনের একমাত্র সম্বল গরুগুলো হারিয়ে হতবাক হয়ে পড়েছেন এবং তাৎক্ষণিক শারীরিক ভাবে অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। গরুগুলোর আনুমানিক মূল্য ৪ থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকা হবে। কৃষক আলম হোসেনের মেয়ারা জানান, আমরা ৫ বোন এক বোনের বিষয়ে হয়েছে। আর আমরা ৪জন লেখাপড়া করছি। আমাদের কোনো ভাইনেই। বাবা নিজের জমিতে কৃষি কাজ ও ঋনের টাকায় অনেক কষ্টে গরু লালন পালন করে সংসার চালায়। তার কোন ভাই নেই। অশ্রু চোখে কান্না গলায় আরো বলেন, অনেক স্বপ্ন নিয়ে গরুগুলোকে লালন পালন করা হত। মা-বাবা আর আমরা ৪ বোনের জীবনে এখন যেন অন্ধাকার নেমে এসেছে।এখন সংসার চালানো দূরের কথা, ঋন পরিশোধ করার মতো সামর্থ্যও থাকলো না। গরুগুলোকে হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছি আমরা। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া ইসলাম সীমা জানিয়েছেন, দরিদ্র কৃষকদের উপার্জনের একমাত্র সম্বল ৫টি গরু বাড়ির সামনের চাড়িতে রাখা খাবার খেয়ে মারা যাওয়ার বিষয়টি তিনি শুনেছি। এছাড়াও ঘটনাস্থলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার নির্দেশে একজন অফিসার পরিদর্শন করেছেন। তবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো অর্থ সহায়তা দেয়া যায় কি না, সে বিষয়ে আমরা দেখব। সমাজের বিত্তশালী ব্যক্তিদেরও ওই পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।