মোঃ জাহেদুল ইসলাম রতন লালমনিরহাট: মাঘের কনকনে শীত উপেক্ষা করেই বোরো ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন লালমনিরহাটের কৃষকরা।কৃষকরা তীব্র শীত উপেক্ষা করে বোরো ধান লাগানো শুরু করেছেন। ধানের দাম ভালো বলে উৎসাহ সহকারে আগে ভাগেই চারা তোলা ও ধান রোপণ শুরু করেছেন। জেলার অপেক্ষাকৃত নিচু ও বিল এলাকার জমিতে স্থানীয় জাতের বোরো ধান ও আগাম জাতের হাইব্রিড ধান চাষ শুরু করেছে। লালমনিরহাটে আমন মৌসুমে ভালো উৎপাদন ও ধানের ন্যায্য মূল্য পাওয়ায় কৃষকেরা শীতকে উপেক্ষা করে আরো নতুন স্বপ্ন নিয়ে মাঠে নেমেছেন তারা।মৌসুমের শুরুতে প্রতিদিন ভোর ৬টা থেকে বেলা ২টাপর্যন্ত চলছে ধানের চারা রোপণ।কৃষকদের বোরো ধানের আবাদি জমিতে পানি সেচ ওজমির পরিচর্যা করতেও দেখা গেছে।ফসলীজমি এখন সবুজের সমারোহ। এবার আবাদকৃত উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড ধানের জাত গুলো হলো ইস্পাহানি সেভেন, এসিআই কোম্পানির বন্ধু , পারটেক্সসের বালিয়া টু, সিনজেন্টাল কোম্পানির হীরা ১২, ব্রাকসিডের সাথী, আফতাব ১০৬, সুপ্রিম সীড কোম্পানির হীরা সিক্স। দেশি জাতের ধানের মধ্যে ব্রি ধান ৭৪,ব্রি ধান ১০০ সহ উচ্চ ফলনশীল ধানের জাত রোপণ করেছেন কৃষকরা। সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন স্থানে দেখা যায় বোরো চারা রোপণের জন্য মাঠ প্রস্তুতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। কেউ পানির সেচ দিচ্ছেন, কেউ আবার গরুর হাল দিয়ে মই দিচ্ছেন,কেউবা বীজতলা ও পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। যেসব জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষ করা হচ্ছে ,তার সার্বিক পরিচর্যার জন্য কৃষি বিভাগ থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ নিচ্ছেন। যেসব কৃষক আমন ধান কাটার পর আলু বা সরিষা চাষ করেননি, তারা আগাম সে সব জমিতে বোরো ধানের চারা রোপণ করছেন। ইরি বোরো ধানের মধ্যে কৃষি বিভাগের নতুন উদ্ভাবন করা ভ্যারাইটি হাইব্রিড ও উপশী জাতের ধান এবার বেশী করে রোপণ করছেন কৃষকেরা।লালমনিরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মোঃ সাইফুল আরিফিন জানায়, চলতি মৌসুমে জেলায় ৪৮ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, প্রত্যেক উপজেলার অনেক স্থানে আংশিকভাবে ধান-রোপণ কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। কৃষকদের সহায়তায় বীজতলা ও জমি তৈরি থেকে শুরু করে চারা রোপণ কার্যক্রমের তদারকি করে যাচ্ছে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর। লালমনিরহাট সদরের কুলাঘাট ইউনিয়নের কৃষক জাহাঙ্গির আলম (৫৫) জানায়, তিনি এবার ১১ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করবেন। ইতিমধ্যে সবার আগেই জমিতে পানি নিষ্কাসনের সাথে সাথে তিনি ৫ বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপণ করতে শুরু করেছেন। তিনি আমন ধানের ভালো ফলন পেয়েছেন তাই এবার বোরো চাষের জন্য একটু আগে থেকেই জমির পরিচর্যা ও বোরো ধান রোপণ করছেন। তবে তিনি বলেন, এবার প্রচন্ড ঠান্ডা হওয়ায় কৃষি শ্রমিকরা তাদের মজুরি কিছুটা বেশি নিচ্ছেন। লালমনিরহাট সদরের উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খন্দকার সোহায়েল আহমেদ জানায়, ১১ হাজার ৫৬০ হেক্টর জমিতে সদর উপজেলায় বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ।যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৯হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন। তিনি বলেন, সেচ সুবিধা থাকায় ও ধানের দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকরা বোরো ধান চাষে অধিক মনোযোগী হয়েছে পড়েছে।
Leave a Reply