চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীর ১৮ নং ওয়ার্ড পূর্ব বাকলিয়ার পলাতক আওয়ামী লীগ সেক্রেটারি হারুনের ‘অবৈধ বালুর ড্রেজার ব্যাবসার রাজত্ব’ এখন বিএনপির সেক্রেটারি হাজী মহিউদ্দিনের দখলে। জানা গেছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর চট্টগ্রাম নগরীর পূর্ব বাকলিয়ার দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের পলাতক সাধারণ সম্পাদক ও ভোটারবিহীন কাউন্সিলর আলহাজ্ব হারুন ও তার ভাই মুছার দখলে থাকা অবৈধ বালুমহাল,সিএনজিস্ট্যান্ড, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা স্ট্যান্ডসহ কর্ণফুলী নদীর তীর ঘেঁষা বিভিন্ন স্থাপনা একে একে দখলে নিয়েছেন ১৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মহিউদ্দিন। এ যেন দখল বাণিজ্যে হারুন-মহিউদ্দিন ভাই ভাই! স্থানীয় কয়েকজন নেতৃবৃন্দ জানান, আগে হারুন ও তার ভাই মুছা, বোয়ালখালীর বালুদস্যু বাপ্পির বালু বেচত। এখন বিএনপি নেতা মহিউদ্দিনের নেতৃত্বে ৫আগস্ট পরবর্তী স্বৈরাচার খুনি হাচিনা পালিয়ে যাওয়ায় বিএনপিতে অনুপ্রবেশকারী বিএনপি নামধারী যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ বাস্তুহারালীগসহ দুই দলের নেতাকর্মীরাই মিলেমিশে বেচে। বালুমহাল ও টমটম, অটোরিকশা সিএনজি টেক্সির খাত থেকে ওঠানো চাঁদার টাকা আওয়ামীলীগের হারুন সমর্থকগোষ্ঠী ও বিএনপির মহিুদ্দিনের বলয়ের মধ্যে ভাগাভাগি করতে সমঝোতার খবরও সরজমিনে উঠে এসেছে । বিএনপি দখল, চাঁদাবাজি, লুটপাট থেকে বিরত থাকতে নেতা-কর্মীদের কঠোর নির্দেশনা দিলেও তা কাজে আসছে না। পূর্ব বাকলিয়ায়। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের পর ১৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিনের সমর্থকগোষ্ঠী ও হারুনের সমর্থকগোষ্ঠী যৌথভাবে বিএনপির রূপ ধারণ করে আওয়ামীলীগের সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর হারুন ও তার ভাই মুছার দুটি বালুর মহালের রাজত্ব কেড়ে নেয় ওয়ার্ড বিএনপির সদ্য বিগত কমিটির সেক্রেটারি মহিউদ্দিন ও বিএনপিতে অনুপ্রবেশকারী তার সমর্থকগোষ্ঠী। গত ১৬ বছর চট্টগ্রাম শহরের কর্ণফুলী নদী থেকে পূর্ব বাকলিয়া অংশে কর্ণফুলী ব্রীজ এলাকা থেকে কালুরঘাট সেতু পর্যন্ত কর্ণফুলী নদের বৃহত্তর এলাকায় বিশের অধিক স্থান থেকে দিন-রাত বেপরোয়া বালু তুলেছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। এর মধ্যে নাম শুনা যায় হারুন ও তার ভাই মুছা, আজম নাছিরের ঘনিষ্ঠজন হিসাবে পরিচিত যুবলীগ নেতা সোলেমান ও বোয়ালখালীর বালুদস্যু বাপ্পির। তারমধ্যে পূর্ব বাকলিয়া ওয়াইজের পাড়া, চেয়ারম্যান ঘাটা অংশে মাঝামাঝি দুটি বালুর মহালের রাজত্ব ছিলো ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সেক্রেটারি সাবেক কাউন্সিলর আলহাজ্ব হারুন ও তার ভাই মুছার। এখন সেই অবৈধ বালুর ড্রেজার ব্যাবসা নিজেদের কবজায় নিয়েছেন পূর্ব বাকলিয়া ওয়ার্ড বিএনপির সেক্রেটারি আলহাজ্ব মহিউদ্দিন ও তার নেতা-কর্মীরা। মহিউদ্দিন বিএনপি করলেও তার আপন বড় ভাই ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামীলীগ থেকে নির্বাচিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর ছিলেন। মহিউদ্দিনের পরিবার মূলতঃ আপাদমস্তক আওয়ামীলীগ সমর্থিত পরিবার হওয়ার সুবাদে ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাথে মহিউদ্দিনের রয়েছে নিবিড় সুসম্পর্ক! মহিউদ্দিনের পিতা মরুহম সেকান্দর হোসেন ১৮ ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি ছিলেন এবং আওয়ামীলীগ থেকে র্নিবাচিত চেয়ারম্যান ও কমিশনার ছিলেন। সূত্র জানায়, আওয়ামীলীগ থেকে পল্টিমেরে বিএনপিতে লুটপাট করার উদ্দেশ্যে যোগদানকরা মহিউদ্দিন প্রথমে ব্যাবসার পরিধি বাড়ানোর জন্য সাবেক মন্ত্রী মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনের অনুসারী ছিলেন, পরবর্তীতে বিশেষ সুবিধা নিয়ে সাবেক মন্ত্রী মরহুম আবদুল্লাহ আল নোমানের অনুসারী হয়ে বহুদিন রাজনীতির মাঠে ফায়দা করতে না পেরে তৎকালীন আমলে চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে পূর্ব বাকলিয়া বিএনপির নেতৃত্বে সাধারণ সম্পাদকের পদবী বাগিয়ে নেয়। সাধারণ সম্পাদকের পদবী নিয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠে ভিন্ন অপকর্মে। মহিউদ্দিনের নেতৃত্বে ওয়ার্ড বিএনপিতে অনুপ্রবেশকারীর স্থান হয়। বর্তমানে বিশেষ সুবিধা নিয়ে আওয়ামীলীগ থেকে বিএনপিতে যোগদান করা বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আলহাজ্ব শামসুল আলম এর নেতৃত্বে ওয়ার্ড বিএনপিতে আওমীলীগের অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে বলয় তৈরী করে মহিউদ্দিন দখলদারিত্বের রাজত্ব কায়েম করতে মরিয়ো হয়ে উঠেছে। মহিউদ্দিনের বিএনপির রাজনীতির রহস্য মূলতঃ যেনতেন উপায়ে ১৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হওয়া। নিরেট বিএনপির রাজনীতি করা তার মুখ্য উদ্দেশ্য নয়। জানা যায় , ইতমিধ্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহ বরাবরে মহিউদ্দিনের দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছে স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপি নেতৃবৃন্দ। ৫ আগস্টের পরে মহিউদ্দিন তার অবৈধ বলয় ভারি করার জন্য আওয়ামীলীগের অনপ্রবেশকারীদের বিএনপিতে সম্পৃক্ত করে পূর্ব বাকলিয়ার কল্পলোক আবাসিক এলাকা, মেরিন ড্রাইভ রোড হয়ে বলির হাট, ওয়াজের পাড়া, বজ্রঘোনা এলাকায় ব্যাপক চাঁদাবাজি ও দখলবানিজ্যের রাজত্ব কায়েম করেছে মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুনা যাচ্ছে পলাতক আওয়ামীলীগ কাউন্সিলর হারুনের সাথে বিএনপির সাবেক সেক্রেটারি মহিউদ্দিনের মধ্যে বালুর মহাল ভাগাভাগি হয়েছে। মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে গত মেয়র নির্বাচনে বিএনপির টিকেটে কাউন্সিলর নোমিনেশন নিয়ে হারুনের সাথে বিশেষ সমঝোতা করে নিজ দল বিএনপির ওয়ার্ড রাজনীতিকে হুমকির মধ্যে ফেলে আত্ম গোপনে চলে যান মহিউদ্দিন, এমন অভিযোগ করেছেন ওয়ার্ড ও বাকলিয়া থানা বিএনপি, যুবদল মহিলাদল নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতৃবৃন্দ। অসুস্থততার অযুহাতে মহিউদ্দিন ইতিপূর্বে আর বিএনপি করবেনা মর্মে ঘোষণা দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ করেছেন পূর্ব বাকলিয়া স্থানীয় অনেক রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। সূত্রে আরো জানা যায় , মহিউদ্দিনের রয়েছে একঝাঁক আওয়ামীলীগের স্বশস্ত্র ক্যাডারবাহিনী ও মাদককারবারী, যারা এখনও ডেভিল হান্ডের মত স্পর্শকাতর অপারেশনও ধরাছোঁয়ার বাইরে , যার কারণে নগরীতে চুরি ছিনতাই হত্যা রাহাজানি বেড়েই চলেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট জনেরা জানা যায়, মহিউদ্দিনসহ তার বলয়ের দখল বাণিজ্য ও চিহ্নিত কিছু চাঁদাবাজের কারণে গত ১৬-১৭ বছর ত্যাগী মামলা হামলা শিকার নির্যাতিত ওয়ার্ড বিএনপি নেতাকর্মীদের ব্যাপকভাবে দুর্নাম এবং ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন অনেকে বাকলি এলাকার বিএনপি নেতৃবৃন্দরা জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত কান্ডারী তারেক রহমান সহ হাই কেন্দ্রীয় হাই কমান্ড নেতা-নেত্রীত্ব দের দিকে দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
Leave a Reply