মোঃ জাহেদুল ইসলাম রতন লালমনিরহাট: লালমনিরহাট জেলায় ৫৫ টি ইটভাটার মধ্যে ৩৬ টি ভাটা, দীর্ঘদিন ধরে রীট পিটিশনের নামে চালু রয়েছে। নেই কোনো পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন। বিপুল পরিমাণে রাজস্ব হারাচ্ছেন সরকার,পাশাপাশি পরিবেশ ও কৃষি জমির ক্ষতি হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, অনুমোদনপ্রাপ্ত ইটভাটার সংখ্যা মাত্র ১৯টি। বাকিগুলো অবৈধভাবে চালু রয়েছে। অনেক ভাটার লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না নিয়েই কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।উপজেলা ভিত্তিক বিশ্লেষণ ১. পাটগ্রাম: ৪টি ভাটার মধ্যে ১টি অবৈধ।– মেসার্স আসিফ ট্রেডার্স-পিজিএম ব্রিকস: ২০১৩ সালে লাইসেন্স পেলেও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই।২. হাতীবান্ধা: ১৭টি ভাটার মধ্যে ১২টি অবৈধ।– মেসার্স বেঙ্গল ব্রিকস (লাইসেন্স নং ০৪/২০০৩): ২০১২ সাল থেকে লাইসেন্সবিহীন।– মেসার্স জে এস ব্রিকস (লাইসেন্স নং ০৮/২০০৪): ২০১৩ সাল থেকে ছাড়পত্র নেই। ৩. কালীগঞ্জ: ১২টির মধ্যে ৮টি অবৈধ।– মেসার্স এস ই পি বি ব্রিকস (লাইসেন্স নং ১/২০২০): ২০২০ সালের পর লাইসেন্স নবায়ন হয়নি।– মেসার্স এএলবি ব্রিকস (লাইসেন্স নং ০৫/২০১৭): কোনো ছাড়পত্র নেই। ৪. আদিতমারী: ১৪টি ভাটার মধ্যে ১০টি অবৈধ।– মেসার্স সান ব্রিকস (লাইসেন্স নং ২১/১৯৯৯): ২০১৮ সাল থেকে লাইসেন্সবিহীন।– মেসার্স থ্রি স্টার ব্রিকস (লাইসেন্স নং ০৬/২০০৪): ২০১৩ সাল থেকে ছাড়পত্র নেই।৫. লালমনিরহাট সদর: ৮টি ইটভাটার মধ্যে ৫টি অবৈধ।– মেসার্স আর এম ব্রিকস (লাইসেন্স নং ১৬/১৯৯৬): ২০১৪ সালে লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ।– মেসার্স স্যার ব্রিকস (লাইসেন্স নং ০৫/২০০৪): ২০১৩ সাল থেকে ছাড়পত্র নেই।– মেসার্স টু স্টার ব্রিকস (লাইসেন্স নং ০১/২০০৯): ২০১৮ সাল থেকে মেয়াদ উত্তীর্ণ। অবৈধ ইটভাটার প্রভাব স্থানীয়দের অভিযোগ, ইটভাটার কালো ধোঁয়া পরিবেশ দূষণ করছে। এসব অবৈধ ইটভাটা সাধারণ জনগণের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে বিঘ্নিত করছে। পাশাপাশি ফসলের উৎপাদন কমে যাচ্ছে, কৃষি জমি ও জনবসতি এলাকার মধ্যে ইটভাটা স্থাপন করায়।একজন ভুক্তভোগী কৃষক জানান, আমাদের যেসব জমি ভাটার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে, সেগুলো আর চাষযোগ্য থাকছে না। ইটভাটার ধোঁয়ার কারণে জমির ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে, স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে রয়েছে উদাসীনতার অভিযোগ। রাজনৈতিক ও আর্থিক প্রভাব খাটিয়ে মালিকরা নিয়মিত এ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রাকিব হায়দার বলেন,অবৈধ ইটভাটাগুলো শুধু পরিবেশ ও কৃষি জমির জন্য ক্ষতিকর নয়, বরং এটি সরকারের রাজস্ব আয়ের জন্যও হুমকি। প্রশাসনের দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা ছাড়া এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।“আমরা খুব দ্রুত অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করব। উপজেলা প্রশাসনকে ইতিমধ্যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরিবেশ রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
Leave a Reply