ওয়াহিদ মুরাদ, খুলনা ব্যুরো চীফ–সবজি চাষ করে সফলতা অর্জন করেছেন কৃষক ইদ্রিস আলী ।শীতকালীন সবজি চাষ করে মাসে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা আয় করছেন খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার সুগন্ধী গ্রামের বাসিন্দা মোঃ ইদ্রিস আলী। সুগন্ধী নির্মাণাধীন টেকনিক্যাল স্কুল এ্যান্ড কলেজের সামনে ১ বিঘা জমিতে বিভিন্ন সবজি চাষ করেছেন তিনি। তাঁর এই সবজি চাষ দেখে পার্শ্ববর্তী এলাকার বেকার যুবকেরা উদ্বুদ্ধ হয়ে উঠছেন সবজি চাষে। মোঃ ইদ্রিস আলী দিঘলিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড এলাকার বাসিন্দা। বর্তমানে তিনি নিজ বাড়িতে থেকেই এখানেই চাষাবাদ করছেন। এক বিঘা জমিতে কলমি, লালশাক, মূলা, পালং শাক, সবুজ শাক, ধনে পাতাসহ বিভিন্ন সবজির চাষ করেছেন। মোঃ ইদ্রিস আলী এ প্রতিবেদককে বলেন, দিঘলিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের সুগন্ধী-উপজেলা রাস্তার পাশে নির্মাণাধীন সুগন্ধী টেকনিক্যাল স্কুল এ্যান্ড কলেজের সামনে সড়কের পূর্ব পাশে এক বিঘা জমি রয়েছে। ওই জমিতে লালশাক, পালং শাক, সবুজ শাক, কলমি শাক, মূলা, ধনিয়া শাকসহ বিভিন্ন শীতকালীন সবজি চাষ করেছি। এ বছর লাল শাক, কলমি শাক ও ধনিয়া পাতা দিয়ে বিক্রয় যাত্রা শুরু করেছি। এ জমিতে প্রচুর লাল শাক ও পালং শাক হয়েছে। ইদ্রিস আলী আরও বলেন, ২০০১ সাল থেকে আমি এ জমিতে সবজি চাষ শুরু করি। রাস্তার পার্শ্বে জমি থাকায় সবজি চাষের পরিকল্পনা শুরু করি। ধীরে ধীরে সবজি খেতের পরিমাণ বাড়াতে থাকি। প্রতিদিন সবজি খেত পরিচর্যা করতে হচ্ছে। কাজের চাপ বাড়লে দৈনিক মজুরিতে লোক নেওয়া হয়। সবজি বিক্রি করে উৎপাদন ও পরিবহন খরচ বাদ দিয়ে ভালোভাবেই সংসার চলছে। জমি চাষ, বীজ ক্রয় ও বপনসহ সেচ খরচ বাবদ ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বীজ ও কীটনাশক বাকীতে আনা। যা উৎপাদিত সবজি বিক্রি করে আস্তে আস্তে কিস্তিতে পরিশোধ করা লাগবে। ক্ষেতে উৎপাদিত শাক সবজি পার্শ্ববর্তী দৌলতপুর, পথেরবাজার, নগরঘাট, উপজেলা মোড়, সেনহাটি বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করে থাকি। সবজির ফলন ভালো হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের চাহিদা পূরণ হচ্ছে। কিছু কিছু সবজি পাইকারি বিক্রি করা হচ্ছে এবং আগামীতে বিক্রি হবে। সবজিতে কোনো সমস্যা দেখা দিলে প্রতিরোধে ঔষুধ স্প্রে করা হয়। ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা কামাল হোসেনকে ফোন দিলে তিনি ক্ষেতে এসে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন। সুগন্ধী গ্রামের সামনের দিকেও অন্যান্য কৃষকেরা সবজি চাষ করে থাকে। বর্তমানে বাজার নিম্নমুখী হলেও ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকদের লোকসান হচ্ছে না। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ কামাল হোসেন বলেন, এ বছর শেষ সময় এসে প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও পরবর্তীতে সবজি উৎপাদন ভালো হওয়ায় চাষীরা ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ কিশোর আহমেদ এ প্রতিবেদককে জানান, সফল সবজি চাষি ইদ্রিস আলীসহ উপজেলার সকল কৃষককে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করে যাচ্ছি। সুগন্ধী গ্রামের কৃষকদের মাঝে সমিতিও আছে। এ অঞ্চলে একসঙ্গে প্রচুর সবজি উৎপাদন হওয়া ও বাজারে আসার কারণে সবজি বাজারে সবজির মূল্য নিম্নমুখী হয়েছে। সবজির বাজারে সবজির টান হলেই সবজির বাজার আবার কৃষকদের অনুকূলে আসবে।
Leave a Reply