হাবিবুর রহমান নেত্রকোনা: নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা উপজেলার ২নং সাহতা ইউনিয়নের ভুমি অফিসে টাকা ছাড়া মিলছে না সেবা। সহকারী ভূমি কর্মকর্তা নিজেই কাজের ধরন ও জমির পরিমাণ অনুযায়ী ঘুষের হার নির্ধারণ করে থাকেন।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাহতা ইউনিয়ন ভুমি অফিসের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা সেবা গ্রহীতা কাছ থেকে প্রকাশ্যে ১৮০০ টাকা ঘুষ গ্রহণ করছেন এবং ওই টাকা গুনে নিজের পকেটে রাখছেন। এরপর তিনি সেবা গ্রহীতাকে বলছেন, আপনি চলে যান। বাকি ৩২০০ টাকা নিয়ে আসলে কাজ হয়ে যাবে। ঘুষের লেনদেনের বিষয়টি এই প্রতিনিধি জানতে চাইলে ভূমি কর্মকর্তা কিছুটা বিচলিত হয়ে বলেন, জমির কর হিসেবে ১৮০০ টাকা নিয়েছি। তার কাছে আরো ৩২০০ টাকা বকেয়া রয়েছে। ১৮০০ টাকা কেন অগ্রিম নিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন বাকি টাকা পরে দিবে তাই টাকা রাখা হয়েছে। ঘুষের টাকা গ্রহণের একটি ভিডিও সাংবাদিকদের ক্যামেরা ধারণ করা থাকলে সেই ভিডিও দেখিয়ে টাকার পরিমাণ নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে না পেরে চুপ হয়ে যান। আরও জানা গেছে, ভূমি-সংক্রান্ত সব কাজে সেবাগ্রহীতাদের গুনতে হয় অতিরিক্ত টাকা, নয় তো পড়তে হয় সীমাহীন ভোগান্তিতে। অনিয়ম, ঘুষ, দুর্নীতি, হয়রানি নানা অভিযোগ উঠেছে এ ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে ভূমি অফিসের চৌহদ্দিতে ঢুকলেই তহশিলদারের নিজের করা আইন মানতে হয় ভূমিসেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষকে। এতে অসহনীয় ভোগান্তিতে পড়তে হয় সেবাগ্রহীতাদের। সেবা গ্রহীতারা বলেন, জরুরী ভিত্তিতে এই অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি। আরো জানা যায়, এই ভূমি কর্মকর্তা তিনি অনেক সেবা গ্রহীতাকে বিভিন্ন ভয় বৃতি দেখিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা আদায় করেন। এবং আরও জানা যায় তুহিন নামে একটি ছেলে তার এই অনিয়মের সহযোগিতা করে যাচ্ছে। এবং এই ভূমি কর্মকর্তার উচিলায় সেই ছেলে তুহিন এখন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ। বিষয়টি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
আরও জানা গেছে, খাজনার দাখিলার জন্য (ভূমি উন্নয়ন করের রসিদ) সরকার নির্ধারিত ফির চেয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায় করলেও রসিদ দেয়া হয় সরকারি হিসাবে। এসবের মাধ্যমে প্রতি মাসে লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন এই ভূমি সহকারী কর্মকর্তা।
স্থানীয়দের অভিযোগ করে বলেন, নাম খারিজের বেলায় সরকারি নির্ধারিত ফি এক হাজার ১৫০ টাকা হলেও অতিরিক্ত হিসেবে আট থেকে ১০ হাজার টাকা এমনকি ব্যক্তি ভেদে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত নেন ওই কর্মকর্তা। দাবিকৃত ঘুষের অর্থ দিতে অস্বীকার করলে নানা টালবাহানা করে জমির মালিকদের হয়রানি করেন তিনি। বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা আক্তার ববি জানান, আমার কাছে এখনও এ ধরনের কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply