1. admin@pressbd.online : admin :
মঙ্গলবার, ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৭:৫৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ড: শফিকুর রহমানের আগমন উপলক্ষে ঈদগাঁওতে জামায়াতের স্বাগত মিছিল ও পথসভা অনুষ্ঠিত  দৌলতপুরে‘তারুণ্যের ভাবনায় আগামীর বাংলাদেশ’শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত ব্রিটিশ টোব্যাকো ম্যানেজারের লক্ষাধিক টাকা ছিনতাই রাবনাবাদ নদী থেকে অজ্ঞত  ব্যক্তির লাস উদ্ধার  লামায় থেকে অপহৃত ৭ শ্রমিককে মুক্তি দিয়েছে সন্ত্রাসীরা ঝাউদিয়া থানার দাবিতে কুষ্টিয়ায় মহাসড়ক অবরোধ দক্ষিণ জেলা আহবায়ক কমিটিকে  স্বাগত জানিয়ে পটিয়ায় বিএনপি’র  বর্ণাঢ্য আনন্দ মিছিল সমাবেশ নরসিংদী’র শিবপুর সরকারি শহীদ আসাদ কলেজে শ্রী শ্রী সরস্বতী পূজা- ২০২৫ অনুষ্ঠিত  রূপগঞ্জে মেশিনারিজ দোকানে আগুন ! ১৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি শার্শায় উৎসবমুখর পরিবেশে বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

রূপসা ঘাটে  অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও পল্টুন সংস্কারের অভাবে যাত্রীদের পারাপারে চরম ঝুঁকি, পরিদর্শনে নির্বাহী অফিসার

  • প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ২৫ বার পাঠ করা হয়েছে
শহিদুল্লাহ আল আজাদ. রূপসা,খুলনা: খুলনার ঐতিহ্যবাহী রূপসা ঘাটের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য সরেজমিনে  পরিদর্শন করলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আকাশ কুমার কুন্ডু। এই ঘাট একটি জন গুরুত্বপূর্ণ ঘাট। এখান থেকে প্রতিদিন প্রায় অর্ধ লক্ষ লোক পারাপার হয়। বিভাগীয় শহর খুলনায় বিভিন্ন অঞ্চলের লোকজন যাতায়াত করে এই ঘাট দিয়ে। তাই এ সকল অঞ্চলের যাত্রীদের কাছে এই ঘাটের গুরুত্ব অপরিসীম। যেমনি এই ঘাট অনেক গুরুত্বের তেমনি এই ঘাটের অনিয়ম ও দুর্নীতির ফিস্তিও অনেক বড়। এই ঘাটের টোল আদায়কারী ও মাঝিদের সীমাহীন অনিয়ম এ অঞ্চলের যাত্রীদের বিষিয়ে তুলেছে। এ ধরনের অন্যায় অনিয়মের মধ্যে দিয়ে প্রতিদিন পারাপার হতে হয় যাত্রীদের। তাই তাদের মাঝে অসন্তোষ ও চরম দুর্ভোগ সবসময়ই থেকে যায়। ভুক্তভোগীদের তথ্য অনুযায়ী,অসাধু ট্রলার মাঝিরা সবসময় অধিক অর্থ উপার্জনের লক্ষ্যে সুযোগ খোঁজে। পারাপারের জন্য বড় নৌকায় ৩০ জন ও ছোট নৌকায় ২৫ জন যাত্রী নির্ধারণ করা থাকলেও অনেক সময় তা না’মেনে অধিক পরিমাণ যাত্রী নিয়ে ঝুঁকির মধ্যে দিয়ে মাঝিরা অধিক অর্থ আয় করে থাকে। এতে যাত্রীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়। মাঝিরা যাত্রী পারাপারের ক্ষেত্রে রাত্রে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখে না এবং শিশু শ্রমিক দিয়ে ট্রলার চালায়। নিয়মের বাইরে গিয়ে অধিক পরিমাণ যাত্রী নেয়। আর এ সকল অনিয়মের বিরুদ্ধে যদি কখনো যাত্রীরা প্রতিবাদ করে তখন সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে মাঝিরা ওই যাত্রীকে হেনস্থা করে। এ ধরনের অভিযোগ অনেক রয়েছে মাঝিদের বিরুদ্ধে। অসহায় যাত্রীরা তাদের এ ধরনের দুর্ব্যবহারের শিকার হয়ে সম্মানের ভয়ে  চুপ থেকে যায় অনেক সময়। সময়ের সাথে সাথে সব জিনিসের দাম বাড়তে থাকলে মাঝিরাও বসে থাকে না তাদের ভাড়া বৃদ্ধির ব্যাপারে। বাড়াতে বাড়াতে তারা এখন যাত্রীপ্রতি ৪ টাকা নেয়। সুযোগ পেলে অনেক সময় দিনের বেলাও ৫ টাকা করে নিয়ে কিছু কিছু ট্রলার মাঝিরা  যাত্রী পারাপার করে। একটু রাত হলে জনপ্রতি  ১০ টাকা করে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে এ সকল মাঝিদের বিরুদ্ধে। ক্ষমতার পালাবদলে অনেক সরকার আসলেও তারা কিন্তু প্রতিটি সরকারের সাথে তাল মিলিয়ে তাদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে একটুও পিছিয়ে থাকতে প্রস্তুত নয় মাঝিরা এমন মন্তব্য অনেক যাত্রীর। এই ঘাট দিয়ে নিয়মিত পারাপার হওয়া আজগার আলী নামের এক ব্যক্তি বলেন, এদের এ ধরনের জুলুমের সাথে আমরা মানিয়ে নিতে অভ্যস্ত হয়েছি। কারণ কখনোই এরা শুধরাবে না। ছাত্র- জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর কিছুদিন ছাত্ররা এই ঘাটের শৃঙ্খলা ফেরাতে কাজ করে। যতদিন ছাত্রদের অবস্থান ছিল ততদিন ঘাটে নিয়ম-শৃঙ্খলা বজায় ছিল। যখন ছাত্ররা তাদের কর্মকান্ড বন্ধ করে দেয়। তখন থেকে আবার মাঝিরা তাদের পূর্বের অনিয়মে ফিরে আসে। এমনকি ট্রলারে যাত্রী উঠানো- নামানোর ক্ষেত্রেও তাদের রয়েছে অনেক অনিয়ম ও অবহেলা। যেখানে সেখানে মন চাইলে ট্রলার ভিড়িয়ে যাত্রী উঠায় এবং নামায়। পল্টুনে যাত্রী উঠা- নামার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা থাকলেও মাঝিরা খামখেয়ালি করে অনেক উঁচু জায়গায় ট্রলার ভিড়িয়ে দেয়। যেখান দিয়ে বৃদ্ধ, মহিলা ও অসুস্থ রোগীদের উঠানামা করতে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। আর এ নিয়ে মাঝিদের কোন শোক তাপ নেই এমনটি বলেন নিয়মিত পারাপার হওয়া যাত্রীরা। মাঝিদের এসকল অনিয়ম মেনেই তবে পারাপার হতে হয় প্রতিদিন শহরগামী বিপুল পরিমাণ যাত্রীদের। মাঝিদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এ ঘাটে টোল আদায়ে যারা নিয়োজিত থাকে তাদের দুর্ব্যবহারেও কমতি নেই। হাফিজ নামের এক যাত্রী বলেন, অতীতে টোল আদায়ে চরম অন্যায়, অনিয়ম এবং বাড়তি টাকা আদায় করতো এই ঘাটে পারাপার হওয়া যাত্রীদের কাছ থেকে। সামান্য কিছু মাল আনলেও মালের  টোলের যে তালিকা রয়েছে সেটি তোয়াক্কা না করে আদায়কারীরা তাদের ইচ্ছামত টোল আদায় করতো । এ ব্যাপারে প্রতিদিনই অনেক যাত্রীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হতো  টোল আদায়কারীদের সাথে। এ সকল মাঝি ও ঘাট ইজারাদারদের অনিয়মের সাথে তাল মিলিয়ে পারাপার হতে হয় যাত্রীদের। কিন্তু ইদানিং ঘাটের যে পল্টুন ও গ্যাংওয়ে রয়েছে তা দীর্ঘদিন যাবত সংস্কারের অভাবে খুবই জরাজীর্ণ এবং ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এভাবে ঝুঁকি নিয়ে এই পল্টুন ও গ্যাংয়ের দিয়ে যাত্রীরা চলাচল করছে। আর এ কারণেই  প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। এটি যেন দেখার কেউ নেই। অনেক সময় অনেক পত্রপত্রিকায় এ বিষয়ে নিউজ হলেও কর্তৃপক্ষ দায়সারা ভাবে মেরামত করে। কিন্তু ক’দিন পরেই আবার বেহাল দশা হয় এই পল্টুন ও গ্যাংয়ের। জনসাধারণের এ ধরনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রূপসা উপজেলা প্রশাসনের নবাগত নির্বাহী কর্মকর্তা আকাশ কুমার কুন্ডু গত ৯ ডিসেম্বর সকাল ১০ টায় সরজমিনে পরিদর্শনে আসেন। তিনি এসে  সার্বিক পরিস্থিতি দেখেন এবং ঘাটে অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা নিরসন করে একটি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য ট্রলার মাঝিদের নেতৃবৃন্দ এবং ইজারাদার দের সঙ্গে কথা বলেন। এবং সকল মহলকে নিয়ে বসার একটি পরিবেশ তৈরি করেন। এ সময় সাংবাদিকদরা তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এসে দেখলাম পল্টুন এবং গ্যাংওয়ের অবস্থা খুবই খারাপ। আমাদের সাথে বিআইডব্লিউটিএ এর সহকারী পরিচালক আছেন। উনাদেরকে বলেছি, তিনি আমাকে বলেছেন বর্তমান যারা ইজারাদার আছেন তাদের দিয়ে অচিরেই একটি ব্যবস্থা নেবেন। আপনারা জানেন ঘাটটি কিন্তু পূর্বে সিটি কর্পোরেশন ও উপজেলা প্রশাসনের অধীনস্থ ছিল। এখন সরকারি আদেশে এটি বিআইডব্লিউটিএ  এর অধীনে গিয়েছে। তারা ভবিষ্যতে এটি রিপ্লেসমেন্ট করবে। আপাতত যাতে কোন সমস্যা না হয় সেটি তারা দেখবে বলে জানিয়েছে। তারা আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে এখানে এসেছে। আশা করছি এ সকল সমস্যার সমাধান অচিরেই হবে। আমরা প্রতিনিয়তই এটি দেখভাল করব। এ সময় বিআইডব্লিউটিএ এর সহকারী ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জয়  দেবনাথ বলেন, ইউএনও মহোদয় আমাদেরকে ডেকেছেন। আমরা এসে যেটা দেখেছি যে পল্টুনের খুবই খারাপ অবস্থা। আপনারা জানেন এটি কিন্তু আমাদের না। এটি সিটি কর্পোরেশনের অধীনস্থ। সরকারি একটি আদেশের বলে এটি অল্প কিছুদিন হলো বিআইডব্লিউটিএ এর অধীনে এসেছে। আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমাদের একটি পল্টুন এখানে রিপ্লেসমেন্ট করব। তাছাড়া ইজারাদার  ও মাঝিদের মধ্যে যে অনৈক্য দেখা দিয়েছে সেটি নিরসনের জন্য আমরা কাজ করব। উল্লেখ্য, ঘাটের  ইজারাদার ও ট্রলার মাঝিরাদের মধ্যে কিন্তু পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দেখা দিয়েছে। এটি ক্রমশ ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে। ইজারাদারদের দাবি তাদের হস্তক্ষেপে মাঝিদের অনিয়মে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অপরদিকে মাঝিদের নেতৃবৃন্দরা দাবি করছে ইজারাদাররা তাদের কাছ থেকে টাকা দাবি করছে। ঘাটের যে সকল সমস্যা বিদ্যমান রয়েছে অচিরেই সকল সমস্যার সমাধান হয়ে নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে যাত্রীরা যাতে পারাপার হতে পারে সেই দাবি এ অঞ্চলের সকল মানুষের। পরিদর্শন কালে নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) অপ্রীতিম কুমার চক্রবর্তী, বিআইডব্লিউটিএর সহকারী পরিচালক সঞ্জয় দেবনাথ, সহকারী পরিচালক বন্দর বিভাগ মোঃ নাহিদুল হক, নৈহাটি ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোঃ ইলিয়াছুর রহমান শেখ,ঘাট ইজারাদার আলি আকবরের প্রতিনিধি আমিনুল ইসলাম, রূপসা ইঞ্জিন চালিত ট্রলার মাঝি ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ হালিম চৌকিদার, সাধারণ সম্পাদক হারেজ হাওলাদার, জয়েন সেক্রেটারি মোঃ খোকন  প্রমূখ। পরিদর্শনে এসে ইউএনও সকলকে নিয়ে বসে একটি সমাধানের ব্যাপারে আশ্বস্ত করেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
February 2025
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
© All rights reserved © 2024
কারিগরি সহযোগিতায়: জাগো হোষ্টার বিডি