হৃদয় রায়হান কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কার্যালয়ের সীমানাপ্রাচীর ঘেঁষে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এতে কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। আজ রোববার বেলা দেড়টার কিছুক্ষণ পর এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে একটি গুলির খোসা জব্দ করেছে। তবে জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি। ঘটনাস্থলের আশপাশে কুষ্টিয়া মডেল থানা ও গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) অভিযান চালাচ্ছে। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পাউবোর কর্মকর্তা ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সকাল থেকে কুষ্টিয়ার পাউবো চত্বরে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের জাতীয়তাবাদী শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের কর্মী সম্মেলন চলছিল। বেলা দেড়টার সময় পাউবোর কর্মকর্তা-কর্মচারীরাসহ অনুষ্ঠানে আসা অধিকাংশ ব্যক্তি চত্বরের মসজিদে নামাজ পড়ছিলেন। এ সময় হঠাৎ দুবার বিকট শব্দ শোনা যায়। পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় ভবন থেকে মাত্র ২০ ফুট দূরে সীমানাপ্রাচীর। প্রাচীর-সংলগ্ন শহরের জিকে এলাকার সড়ক। কার্যালয়ের সামনে দায়িত্বরত আনসার সদস্য মামুন খন্দকার বলেন, তিনি দাঁড়িয়ে ছিলেন। হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পান। এরপর দৌড়ে সীমানাপ্রাচীর দিয়ে উঁকি দিলেও কাউকে দেখতে পাননি। সেখানে দৌড়ে কয়েকটা শিশু আসে। তারা পড়ে থাকা একটি গুলির খোসা হাতে নিয়ে পাউবোর ভেতরে ফেলে দেয়। গুলির শব্দ শুনে পাউবোর চত্বরে থাকা সবাই ছুটে আসেন। সরেজমিনে দেখা যায়, পাউবো চত্বরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সবার সঙ্গে কথা বলছেন। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড জাতীয়তাবাদী শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, অনুষ্ঠান চলাকালে গুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি জানান তিনি। সীমানাপ্রাচীরের পাশে জিকে এলাকা। ওই এলাকায় বালুর ছোট ছোট স্তূপ আছে। সেখানে কয়েকজন শিশু ঘটনার সময় খেলা করছিল। পাউবোর সীমানাপ্রাচীর ঘেঁষেও বালুর স্তূপ রাখা। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী তৃতীয় শ্রেণিপড়ুয়া এক শিশু জানায়, সেসহ আরও দুজন খেলা করছিল। জোরে দুটি শব্দ শুনতে পায়। এরপর দেখে, দেয়ালের (সীমানাপ্রাচীর) কাছ থেকে দুজন দৌড়ে বালুর ওপর দিয়ে পাশে নদের দিকে (গড়াই নদ) যাচ্ছে। একজনের হাতে বন্দুক ছিল। একপর্যায়ে সেটি পড়ে গেলে তুলে আবার দৌড় দিয়ে চলে যায়। আরেকজন বস্তি এলাকায় ঢুকে পড়ে। আরেকজন মোটরসাইকেলে ছিল, সে দ্রুত চলে যায়। পরে দেয়ালের ওপর দিয়ে এক আনসার গুলির খোসা চাইলে, সে খোসাটি ছুড়ে দেয়। পাউবোর কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান বলেন, এ রকম ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি। ঘটনার সময় তিনি কার্যালয়ে নামাজ পড়ছিলেন। তিনিও দুটি শব্দ শুনেছেন। কেন কী কারণে হয়েছে, তা ধারণা করতে পারছেন না। সম্প্রতি পাউবোয় কোনো দরপত্র আহ্বান বা ওপেনের কোনো বিষয় নেই। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে। কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিহাবুর রহমান বলেন, পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে। পাউবোর সীমানার বাইরে ঘটনা। প্রত্যক্ষদর্শী এক শিশুর সঙ্গে কথা হয়েছে। কিছু ধারণা পাওয়া গেছে। গুলি করার পর দুজন ব্যক্তি বালুর ভেতর দিয়ে গড়াই নদে নৌকাযোগে চলে গেছে বলে জানা যায়। এ ঘটনায় তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
Leave a Reply