ওয়াহিদ মুরাদ, খুলনা ব্যুরো চীফ– খুলনার দিঘলিয়া উপজেলায় শুরু হয়েছে বোরো ধান কাটার উৎসব। আকাশে মেঘের ঘনঘটা, কালবৈশাখী ঝড় ও বৃষ্টির আশঙ্কায় দ্রুত ধান কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষীরা। কেউ মাঠে ধান কাটছেন, কেউ কেউ ধান নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। এমন চোখ জুড়ানো দৃশ্য এখন দিঘলিয়ার মাঠে মাঠে। অন্যদিকে, কৃষকের বাড়ির উঠোনে চলছে ধান ঝাঁড়ার কাজ। দম ফেলার সময় নেই কৃষক পরিবারে। এবছর ধানের ভাল ফলন পেয়ে খুশি কৃষক। ঝড়-বৃষ্টির আগেই ধান কাটা শেষ করতে না পারলে ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কা করছেন তারা। খুলনা দিঘলিয়া উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠের বুক জুড়ে সোনালী ধানের সমারোহ দোলা দিচ্ছে কৃষকের মনে। কিন্তু আকাশের কালো মেঘ, যেকোনো সময় কালবৈশাখী ঝড় ও বৃষ্টির আশঙ্কায়, চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে তাদের কপালে। এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত ধান কেটে বাড়ি নেয়া ও ঝেঁড়ে ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-কৃষানীরা। অনেক স্থানে মাঠেই চলছে ধান মাড়াই। অনেক কৃষক ধান ঝাঁড়ার মেশিনের সাহায্যে ধান ঝেড়ে বস্তা ভরে ঘরে তুলছেন। কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে দিঘলিয়া উপজেলায় এবার আবাদ হয়েছে ৪ হাজার ৮৮৫ হেক্টর জমিতে। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ কিশোর আহমেদ এ প্রতিবেদককে জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর বোরো চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষি অধিদপ্তরের পৃষ্ঠপোষকতায় ও নির্দেশনায় খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ব্যবস্থাপনায় অনেক পতিত জমিতে বোরো চাষ করা হয়েছে। কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে এবছরও বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। আজ সকালে দিঘলিয়ার পানিগাতী গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, একদল শ্রমিক ধান কাটায় ব্যস্ত। আরেকদল সেই ধান বাঁধছেন। পাশের ক্ষেতের বেঁধে রাখা ধান মাথায় করে বাড়িতে নিচ্ছেন আরেক দল শ্রমিক। পানিঘাতী গ্রামের চাষী নজরুল ইসলাম জানান-কালবৈশাখী ঝড় ও বৃষ্টির হাত থেকে ধান রক্ষায় আগেভাগেই ধান কাটা শুরু করেছি। ধান মেশিনের সাহায্যে ঝেঁড়ে নিয়েছি। এতে সময় কম লেগেছে। আরেক কৃষক তৈয়ব মোড়ল বলেন- আজ দুইদিন ধরে থেকে থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। শুনতেছি এরকম বৃষ্টি আরো হতে পারে। তাছাড়াও বড় ঝড়-বৃষ্টি হতে পারে। প্রায় প্রতিদিন আকাশে মেঘ দেখা যাচ্ছে। কখন না জানি ঝড়-বৃষ্টিতে মাঠের ধান নষ্ট হয়ে যায়। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ধান কেটে ঘরে তুলছি। তিনি জানান- এবার ফলন খুব ভাল হয়েছে। বিঘায় ২০-২৫ মণ হারে ধান হয়েছে। বাজারে দামও মোটামুটি ভাল পাওয়া যাবে বলে আশা করছি। এবার ধান কাটায় শ্রমিক সংকট নেই। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে ঝড়, শিলাবৃষ্টির হাত থেকে রক্ষায় শতকরা আশি ভাগ ধান পাকলেই দ্রুত কেটে ঘরে তোলার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে কৃষকদের।
Leave a Reply