1. admin@pressbd.online : admin :
বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৪২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
বিপিএম পদক পেলেন খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার-আরেফিন জুয়েল তারাগঞ্জে এনসিপি’র মতবিনিময় ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত সুন্দরবনের উপকূলে কুকুরের কামড়ে আহত ৫০ : হাসপাতালে ভ্যাকসিন সংকট পোকখালীতে বজ্রপাতে লবণ শ্রমিকের মৃত্যু মৌলানা রইস উদ্দিনের হত্যার প্রতিবাদে  পটিয়ায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল মাটিরাঙ্গায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা  তবলছড়ি বনফুল স্কুলের বার্ষিক ত্রুীড়া প্রতিযোগিতা ও নবীনবরণ উদযাপন দেড় যুগ পর আগামীকাল দিঘলিয়া ইউনিয়ন বিএনপি’র সম্মেলন বিশ্ব শান্তির বার্তা ও মানবতার আহ্বান করেছেন কবি শাহ্ জামান চিশতীর সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও মামলায় জার্নালিস্ট প্রটেক্ট কমিটির নিন্দা

নির্মাণাধীন সেতুর নিচ থেকে বালু উত্তোলন, ধসে পড়ার শঙ্কা

  • প্রকাশিত : বুধবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৪৩ বার পাঠ করা হয়েছে

মাটি মামুন রংপুর: রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ পৌর এলাকায় তিস্তার শাখা নদীতে নবনির্মিত সেতুর নিচ থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সাব-ঠিকাদার সেতুর নিচ থেকে বালু উত্তোলন করে রাস্তা নির্মাণ করছে। এতে হুমকিতে পড়েছে প্রায় ৬ কোটি টাকার সেতুটিহারাগাছ পৌরসভার প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সরকারি অর্থায়নে হারাগাছ, পীরগঞ্জ ও বদরগঞ্জ পৌরসভা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় হারাগাছ মেনাজবাজার গোল্ডেনের ঘাট এলাকায় তিস্তার শাখা নদীর রাস্তা নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করা হয়। কাজটি পান ঠিকাদার খায়রুল কবির রানা। ৫ কোটি ৯৮ লাখ ৬৬ হাজার ৩৪৭ টাকা সেতু নির্মাণে এবং ৬৮ লাখ ১৮ হাজার ৬৫৭ টাকা রাস্তা নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়। তবে তার কাছ থেকে সাব-ঠিকাদার হিসেবে কাজটি নেন আশিক নামে আরেকজন। কাজ শুরু ২০২৪ সালের ২০ ফেব্রুয়ারিতে। চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারিতে কাজটি শেষ করার কথা। স্থানীয়রা জানান, হারাগাছে তিস্তা বিধৌত চরাঞ্চলের ৯ গ্রামের মানুষের দুঃখ মরা তিস্তার এ শাখা নদীটি। হারাগাছ পৌরসভাসহ ৪ ইউনিয়নের ভেতর দিয়ে তিস্তা রেলসেতু পয়েন্টে গিয়ে মিলিত হয়েছে মরা তিস্তা নদীটি। বর্ষা মৌসুমে নৌকা আর বাঁশের সাকোই এলাকাবাসীর ভরসা। শুষ্ক মৌসুমে নদীর বুক চিরে পায়ে হেঁটে চলাচল করে এলাকাবাসী। হারাগাছ পৌরসভার গোল্ডেনের ঘাটে একটি টেকসই স্থায়ী পাকা সেতু নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। অবশেষে সেই দাবি আলোর মুখ দেখলেও নির্মাণাধীন সেতুর নিচ থেকে বালু উত্তোলনে নতুন শঙ্কা জেগেছে।স্থানীয় মজিবর রহমান বলেন, পাকা সেতু না থাকায় এতো দিন বাঁশের সাঁকো দিয়ে রাজপুর ইউপির চিনাতুলি, প্রেমের বাজার, খুনিয়াগাছ ইউপির তালপট্টি, হরিণ চড়া, মিলন বাজার, টাংরীর বাজার, হারাগাছ পৌরসভার চরচতুরা, ধুমগাড়া, হারাগাছ ইউপির পল্লীমারী গ্রামের শিক্ষার্থীসহ প্রায় অর্থ লক্ষাধিক মানুষ পৌরসভা ও উপজেলা সদরে যাতায়াত করেছে। এ গ্রামগুলোতে আলু, ভুট্টা, ধান, পাট, গম, মরিচ, বাদামসহ বিভিন্ন ধরনের শাক সবজি উৎপাদন হয়। এসব কৃষি পণ্য হাট-বাজারে নিতে হলে অনেক পথ ঘুরে যেতে হতো। এখন গোল্ডেনের ঘাটে পাকা সেতু নির্মাণকাজ চলছে, এটা তো আমাদের সবার জন্য খুশির খবর। কিন্তু সেতুর নিচ থেকে বালু উত্তোলন করায় এলাকাবাসী চিন্তিত। সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার হারাগাছ পৌর এলাকায় তিস্তার শাখা নদীর ওপর সেতু ও রাস্তা নির্মাণকাজ চলছে। ঠিকাদারের লোকজন সেতুর নিচ থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে সেতুর পশ্চিম পার্শ্বে রাস্তা নির্মাণ করছে। এতে নির্মানাধীন সেতুটি ধসে পড়ার শঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।গোল্ডেন ঘাট এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন বলেন, তিস্তার শাখা নদীর ওপর সেতু না থাকায় দশ গ্রামের হাজার হাজার মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দীর্ঘ প্রায় একযুগ এলাকাবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নদীর ওপর সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। কিন্তু সাব-ঠিকাদার প্রভাব খাটিয়ে ৫ আগস্টের পর নদীতে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করে রাস্তা তৈরি করে। এখন আবার ঠিকাদারের লোকজন সেতুর নিচে থেকে ড্রেজারে বালু উত্তোলন করে সেতুর পশ্চিম পার্শ্বে রাস্তা নির্মাণ করছে। সেতুর নিচ থেকে ড্রেজারে বালু উত্তোলন করায় নির্মাণাধীন সেতুটি বন্যার সময় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। এ অভিযোগ প্রসঙ্গে কথা হয় সাব-ঠিকাদার আশিকের সঙ্গে। তিনি বলেন, সেতুর নিচে ভরাট হওয়া বালু ড্রেজার বসিয়ে উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে সেতুর কোনো ক্ষতি হবে না। বালু উত্তোলন করে সেতুর দুই পাশে রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে এসেছিল। আমরা প্রশাসনকে বলেছি সেতুর নিচে ভরাট হওয়া বালু ড্রেজার ছাড়া সরানো সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কাউনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহিদুল হক বলেন, পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সেতুর নিচ থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ করে দিয়েছেন। জেলা প্রশাসনের অনুমতিপত্র ছাড়া ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সেতুর নিচে ভরাট হওয়া বালু ড্রেজারে উত্তোলন করতে পারবে না বলে নিদের্শ দেওয়া হয়েছে। এদিকে রংপুরের বিভিন্ন নদ-নদী থেকে পাম্প ও ড্রেজার বা অন্য কোনো মাধ্যমে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। একই সঙ্গে ব্যক্তি মালিকানাধীন কৃষি জমির উপরিভাগের উর্বর মাটি বা টপ সয়েল কাটা এবং পার্শ্ববর্তী জমির ক্ষতি হয় এমন কার্যক্রম বন্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করার কথাও বলা হচ্ছে। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও নদী গবেষক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, আমরা আশা করছি, বালু উত্তোলন বন্ধ করাসহ পরিবেশ ও প্রকৃতির সুরক্ষায় প্রশাসন কঠোর অবস্থানে থাকবে এবং আইনের প্রয়োগ করবে। তিনি আরও বলেন, বিগত সময়ের মতো অভিযানের নামে যেন ‘আইওয়াশ’, না হয়। সত্যিকার অর্থে প্রশাসন যদি চায় তাহলে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন এবং কৃষি জমির উপরিভাগের উর্বর মাটি কেটে বিক্রি বন্ধ করা সম্ভব হবে। জেলা-উপজেলা প্রশাসনের এসব অবৈধ কাজ বন্ধ করা কোনো বিষয়ই নয়। কিন্তু এর জন্য সদিচ্ছা জরুরি। নদী সুরক্ষার বিষয়ে আমরা রংপুর জেলা প্রশাসনকে কঠোর অবস্থানে দেখতে চাই। প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের বালুমহাল আইনে বলা আছে, বিপণনের উদ্দেশ্যে কোনো উন্মুক্ত স্থান, চা-বাগানের ছড়া বা নদীর তলদেশ থেকে বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। এ ছাড়া সেতু, কালভার্ট, ড্যাম, ব্যারেজ, বাঁধ, সড়ক, মহাসড়ক, বন, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা বা আবাসিক এলাকা থেকে বালু ও মাটি উত্তোলন নিষিদ্ধ। কিন্তু তা না মেনে এলাকার প্রভাবশালী ঠিকাদার ও তাদের লোকজন এবং বালু ব্যবসায়ীরা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন। এ আইন অমান্য করে রংপুরের তিস্তা, ঘাঘট, করতোয়া, যমুনেশ্বরী, বুড়াইলসহ অসংখ্য ছোট বড় নদ-নদী থেকে বছরের পর বছর ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে বালু খেকোরা। যেন বালু ব্যবসায়ীদের স্বঘোষিত বালুমহালে পরিণত হয়েছে একেকটি নদ-নদীর পেট। যদিও রংপুরে একটি মাত্র বৈধ বালুমহাল রয়েছে। যা জেলা প্রশাসন থেকে ইজারা দেওয়া হয়েছে। বাকি সবগুলো অবৈধ।v

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
April 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031  
© All rights reserved © 2024
কারিগরি সহযোগিতায়: জাগো হোষ্টার বিডি